ভারতের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি কমেছে ১৭ শতাংশ
ছবি: সংগৃহীত
করোনার পর টানা দুই অর্থবছর ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজারটিতে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের রপ্তানি ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু এরপর রপ্তানিতে ছন্দপতন ঘটে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত বাজারটিতে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাস জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বাজারে ১২৭ কোটি ডলারের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ১৫৩ কোটি ডলারের পণ্য। এর মানে চলতি অর্থবছরে ইতিমধ্যে রপ্তানি কমেছে ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভারতের বাজারে রপ্তানি হওয়া শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশি পণ্যগুলো হচ্ছে তৈরি পোশাক, পাট ও পাটের সুতা, হোম টেক্সটাইল, সয়াবিন তেল, হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক ইত্যাদি। সার্বিকভাবে রপ্তানি কমার ক্ষেত্রে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ২৩ শতাংশ কমে যাওয়া। কারণ, ভারতে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের প্রায় ৫০ শতাংশই তৈরি পোশাক।
অন্যদিকে রপ্তানি কমলেও ভারতের বাজার থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি বাড়ছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ৫৩৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৯২ কোটি ডলার। তার মানে চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে আমদানি বেড়েছে ৯ শতাংশ। জানা যায়, ভারত ২০১১ সালে বাংলাদেশকে অস্ত্র ও মাদক বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। যদিও সেটা তেমন কাজে লাগাতে পারছিল না বাংলাদেশ।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতে ৪২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। পরের বছর সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ কোটি ডলার। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ১০১ কোটি ডলারের। তাতে দেখা যায়, দুই বছরের ব্যবধানে ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ফলে বাজারটিকে সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখা হয়।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে মোট ৫৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭৫ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এবার রপ্তানি কমেছে ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
তৈরি পোশাক ছাড়াও পাট ও পাটসুতা রপ্তানি কমেছে ১ শতাংশের মতো। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে ১৩ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের পাট ও পাটসুতা রপ্তানি হয়েছে, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ ছাড়া হোম টেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৭ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়। তবে এই সময়ে চামড়া পণ্য ও জুতা রপ্তানি বেড়েছে।