অতি শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উপকূলের আরও কাছে

অতি শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উপকূলের আরও কাছে

অতি শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উপকূলের আরও কাছে- সংগৃহীত ছবি

অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস স্থলভাগের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে। ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের স্থলভাগের আরও কাছে পৌঁছে গেছে। এতে আতঙ্ক বাড়ছে বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলেও।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর রাত তিনটার দিকে দেওয়া এক বুলেটিনে জানায়, গত সাড়ে ছয় ঘণ্টায় স্থলভাগের আরও কাছে চলে এসেছে ইয়াস। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা সৈকত থেকে মাত্র ১৭০ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এটি। একই সময়ে ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার প্যারাদ্বীপ থেকে ১২০ কিলোমিটার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং বলেশ্বর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে  চলে এসেছে। 

বুধবার (২৬ মে) ভোরেই তা স্থলভাগে পৌঁছে যেতে পারে। ফরে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে অধিদপ্তর।

এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর মধ্যরাতে দেওয়া এক বুলেটিনে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে মোংলা বন্দর থেকে ৩৪৫ কিলোমিটার ও পায়রা বন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার দুপুর নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-ওডিশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিন আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের ২০ ডিগ্রি ১ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭ ডিগ্রি ৮ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থান করছে। এই মুহূর্তে ওড়িশার প্যারাদ্বীপ থেকে ১২০ কিলোমিটার পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব, ওড়িশার বালেশ্বর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব,পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে ইয়াস। তার অভিমুখ রয়েছে ওড়িশার ভদ্রক জেলার ধামরা এবং বালেশ্বরের মধ্যবর্তী উপকূলভাগের দিকে। 

বুধবার সকালেই সেখানে আঘাত হানতে পারে ‘অতি শক্তিশালী’ ইয়াস। দুপুর পর্যন্ত সেখানে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা। দীর্ঘ সময় ধরে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বইতে থাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়াবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বুলেটিনে।

এতে বলা হয়, এটি বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার, পশ্চিম কক্সবাজার থেকে ৫১০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়ার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অতি ভারী এবং ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে বুলেটিনে। পশ্চিবঙ্গের দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এর মধ্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনার নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ টপকে ও ভেঙে ওই পানি প্রবেশ করছে। সুন্দরবনের দুবলার চরসহ জেলেপল্লিগুলোর বেশির ভাগ এলাকা এরই মধ্যে ডুবে গেছে।

ইয়াসের প্রভাবে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল জোয়ারের পানিতে উপড়ে পড়ছে গাছপালা। ভাঙন ধরেছে জেটির পল্টুনে ও রাস্তাঘাটে। আর পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারাদেশে সকল নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।