স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জাম

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জাম

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জাম

ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণে দেশী মৌসুমি ফল কিন্তু দারুণ কাজে আসে। আর মৌসুমি ফলের মধ্যে জাম আমাদের দেশে জনপ্রিয় ও সহজলভ্য। পুষ্টিগুণের বিচারেও অতুলনীয়। বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে জাম।

* গবেষণা থেকে দেখা যায়, জাম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ ফল বলে রক্তে সুগার লেভেল স্বাভাবিক রাখে। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া তথ্যানুসারে জামে থাকা উচ্চ অ্যালকালয়েড কন্টেন্ট হাইপারগ্লাইসেমিয়া বা হাই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

* জামের বিচিও অনেক উপকারী। জামের বীজে থাকা জাম্বোলাইন ও জাম্বোসাইন নামক পদার্থ রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি জামের বীজ ইনসুলিনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে।

* উচ্চরক্তচাপে ভুগছে এমন রোগীদের জন্য জাম মহৌষধ। জামে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম জামে প্রায় ৫৫ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে।

* হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় জাম। গবেষণা বলছে, জামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- অ্যান্থোসায়ানিন, গ্লুকোসাইড, ট্যানিনস, গারলিক এসিড ও অন্যান্য উপাদান (ভিটামিন-সি ছাড়া) হাইপারটেনশনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ উপকারী।
* যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা এখন নিয়মিত জাম খেলে উপকার পাবেন। এটি দেহে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। জামে থাকা আয়রন ও ভিটামিন-সি হিমোগ্লোবিন বাড়ায়। পাশাপাশি জামের আয়রন রক্ত পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে।

* জামে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রপারটি ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় এটি কার্যকর। যাদের তৈলাক্ত ত্বক বা ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা জাম খেলে উপকার পাবেন।
* অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম কারণ। আর এটি থেকে রক্ষা পেতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল খুব কার্যকর। জামের মতো গাঢ় রঙের ফলে থাকা প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

* হাড় ও দাঁত ভালো রাখতে খেতে পারেন জাম। কারণ জামে রয়েছে ক্যালসিয়াম। এ ছাড়াও জামে বিভিন্ন বি-ভিটামিন রয়েছে যা খাদ্য বিপাকে সাহায্য করবে। জামে রয়েছে ম্যালিক এসিড, অক্সালিক এসিড, ট্যানিনস যা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে বাঁচাবে। সুতরাং যে কোনও ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে জাম।

তবে এত উপকারের কথা শুনে আবার জামবাটি নিয়ে জাম খেতে বসবেন না। প্রতিদিন ১০০ গ্রামের বেশি জাম না খাওয়াই উত্তম। বিশেষ করে কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েরা জাম খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন।