সাতক্ষীরার সেই এএসআই সুভাষ বরখাস্ত

সাতক্ষীরার সেই এএসআই  সুভাষ বরখাস্ত

এএসআই সুভাষ-

সাতক্ষীরায় অসুস্থ বাবার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ছেলেকে দু’ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনায় অভিযুক্ত ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই ) সুভাষ চন্দ্র সেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ।

শুক্রবার (৯ জুলাই) সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান তাকে বরখাস্তের আদেশ দেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাতে তাকে পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয়।

এদিকে, অমানবিক এ ঘটনা তদন্তে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সাইফুল ইসলাম ও ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তারেক ফয়সাল ইবনে আজিজ।

কমিটির সদস্যরা ইতোমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। শুক্রবার বিকেলে তদন্ত কমিটির প্রধান মো. ইকবাল হোসেন তার কার্যালয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এক সংবাদকর্মীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

করোনার উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন মো. রজব আলী মোড়ল (৬৫)। এ অবস্থায় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তার ছেলে ওলিউল ইসলাম। কিন্তু পথিমধ্যে তাকে আটক করে পুলিশ। মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখার নামে ঘণ্টা দুয়েক আটকে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ততক্ষণে যা হওয়ার তাই হলো। বাড়িতে ফিরে ছেলে দেখলেন অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বাবা।

বৃদ্ধের ছেলে ওলিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন হওয়ায় জেলা পরিষদের সদস্য আলফার বাড়ি থেকে একটি সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সকাল ১০টার দিকে ইটাগাছা হাটের মোড়ে পৌঁছালে তাকে আটকান এএসআই  সুভাষ চন্দ্র সেন। লকডাউনে বাইরে বেরিয়েছে বলে তার কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা দিতে না পারায় তাকে দুই ঘণ্টা সেখানে আটকে রাখা হয়। পরে ইটাগাছা এলাকার জনৈক জিয়াউল ইসলামের মধ্যস্থতায় ২০০ টাকা নিয়ে এএসআই  সুভাষ তাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাড়িতে গিয়ে দেখেন তার বাবা মারা গেছেন। 

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীসহ কয়েকজনের সাক্ষ্য নিয়েছি। আশা করছি শনিবারের মধ্যে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো। আগেই পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড এএসআই  সুভাষকে শুক্রবার চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ডিপার্টমেন্টাল সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।