জয় দিয়ে শুরু হল জিম্বাবুয়ে মিশন

জয় দিয়ে শুরু হল জিম্বাবুয়ে মিশন

জয় দিয়ে শুরু হল জিম্বাবুয়ে মিশন-

জিততে হলে জিম্বাবুয়েকে করতে হতো বিশ্বরেকর্ড। সেই দুরুহ কাজটি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। উল্টো ২২০ রানের বিশাল জয়ে একমাত্র টেস্টের ট্রফি নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৪৬৮ রান। জবাবে ২৭৬ রানে অল আউট জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ ১ উইকেটে ২৮৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লিয়ার করে। তাতে জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ৪৭৭ রান। এ লক্ষ্যে খেলতে নেমে স্বাগতিকরা অল আউট হয় ২৫৬ রানে। বাংলাদেশ পায় নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় জয়। রানের দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় ২২৬ রানে, ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে, প্রতিপক্ষ ছিল এই জিম্বাবুয়েই।

শনিবার চতুর্থ দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১৪০ রান। উইকেটে ছিলেন মায়ার্স ও তিরিপানো। শেষ দিনে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল ৩৩৭ রান। বাংলাদেশের দরকার ৭ উইকেট।

দিনের শুরুটা হয় বাংলাদেশের ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়ে। ৫০তম ওভারে প্রথম ক্যাচ মিস। সাকিবের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মায়ার্স। তা নিতে পারেননি লিটন দাস।

৫৩তম ওভারে নিজের বলে ক্যাচ মিস করেন তাসকিন। যদিও অনেকটা লো ছিল ক্যাচটি। তারপরও লম্বাকৃতির তাসকিনের ক্যাচটি নেয়া উচিত ছিল। পারেননি। বেঁচে যান মায়ার্স। ৫৬তম ওভারের শেষ বলে মিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তিরিপানো। সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি এবার সাকিব।

তিন ক্যাচ মিসের পর স্বভাবতই হতাশ ছিল বাংলাদেশ। এক ওভার পর সেই হতাশা দূর করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫৮তম ওভারের প্রথম বলে মিরাজের বলে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দেন মায়ার্স। তা মুঠোবন্দী করতে ভুল করেননি সাদমান ইসলাম। ৮৮ বলে ২৬ রান করে ফেরেন তিনি।

একই ওভারের চতুর্থ বলে আবার মিরাজের আঘাত। রানের খাতা খুলতে না পারা মারুমাকে এলবির শিকার করেন মিরাজ। পরের ওভারে তাসকিন ঝলক। রয় কাইয়াকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। রয়ও রানের খাতা খুলতে পারেনি। এক রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

কয়েক ওভার পর আবার তাসকিনের রুদ্ররূপ দেখে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৬৪ রানের মাথায় রেগিস চাকাভাকে (১) বোল্ড করেন তিনি। সাত উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকা জিম্বাবুয়েকে তখন এগিয়ে নিতে থাকেন তিরিপানো ও নাউচি।

৬৩তম ওভারের তৃতীয় বলে নাউচির স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তাসকিন। কিন্তু বিধিবাম, নো বল থাকায় বেঁচে যান নাউচি। পরের বলে কট আউটের জোড়ালো আবেদন থাকলেও সাড়া দেননি আম্পায়ার।

দলীয় ১৯৮ রানের মাথায় এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন তাসকিনই। ভিক্টর নাউচিকে সাকিবের হাতে ক্যাচ বানান তিনি। ৫৪ বলে ১০ রান করেন তিনি। পেসার মুজারাবানির সঙ্গে তিরিপানোর রসায়নটা ছিল বেশ।

এরই মধ্যে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেন তিরিপানো। আর সবাই যখন ব্যর্থ, তখন তিরিপানোকে সাজঘরে পাঠিয়ে বাংলাদেশের জয় প্রায় সুনিশ্চিত করেন পেসার এবাদত হোসেন। উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন ১৪৪ বলে ৫২ রান করা তিরিপানো। দলীয় রান তখন জিম্বাবুয়ের ২৩৯। শেষটা করেন মিরাজ। এনগারাভাকে (১০) বোল্ড করে দলকে জয় পাইয়ে দেন। মুজারাবানি ৩০ রানে থাকেন অপরাজিত।

বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে চারটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মিরাজ। ৮২ রানে চার উইকেট, টেস্টে তাসকিনের সেরা বোলিং ফিগার। আগেরটিও ছিল চার উইকেটের, তবে রান দিয়েছিলেন এক শ’ উপর। সাকিব ও এবাদত হোসেন নেন একটি করে উইকেট।