পুজোয় লাগামছাড়া ভিড়,করোনা বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে

পুজোয় লাগামছাড়া ভিড়,করোনা বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে

পুজোয় লাগামছাড়া ভিড়,করোনা বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলায় পুজোর পর করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। কোভিড পরীক্ষা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রশাসনের।

আশঙ্কা ছিল। আশঙ্কা সত্যি হচ্ছে। পুজো যেতে না যেতেই পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েকদিনে সংক্রমণের পরিমাণ আরো বাড়ার সম্ভাবনা আছে। যে কারণে বিভিন্ন জেলায় করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। দ্রুত টিকাকরণের কথাও জানিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি, করোনা বাড়লে সকলকে যাতে চিকিৎসা দেওয়া যায়, তার জন্য পরিকাঠামোও তৈরি রাখা হচ্ছে।

পুজোর সপ্তাহ থেকেই পশ্চিমবঙ্গে করোনার পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছিল। পুজোর পর দেখা যাচ্ছে একেকটি জেলায় দেড় থেকে দুই শতাংশ করে করোনা সংক্রমণের বৃদ্ধি ঘটেছে।

পুজোর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনার সংক্রমণ যেখানে এক শতাংশে নেমে গেছিল, পুজোর পরে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় দুই শতাংশ। বর্ধমানে করোনার সংক্রমণ একের নীচে নেমে গেছিল, পুজোর সপ্তাহে তা আবার প্রায় দুই শতাংশে পৌঁছে গেছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে বহু রোগী তাদের কাছে আসছেন। সকলকেই পরীক্ষা করানোর কথা বলা হচ্ছে।

পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন জেলার প্রশাসন  টিকাকরণ অনেকটাই বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত কয়েকদিনে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় এক লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দৈনিক ৭০০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে সংখ্যাটি দৈনিক এক হাজারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে তারা।

তবে উত্তরবঙ্গে করোনা পরীক্ষার হার এখনো বেশ কম। কোথাও দৈনিক দেড়শ, কোথায় দৈনিক তিনশ জনের পরীক্ষা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গেও পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলেছে প্রশাসন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আগেই ৪৬টি কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করেছিল প্রশাসন। পুজোর পরেও সেগুলি বহাল রাখা হয়েছে। করোনা যাতে ছড়াতে না পারে সে কারণেই এই জোনগুলি রেখে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।হাওড়া, নদিয়ার মতো জেলাগুলিতে করোনার বৃদ্ধি এখনো সেভাবে হয়নি। কিন্তু সেখানেও দ্রুত টিকাকরণের ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। বীরভূমে এরমধ্যেই ৮০ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ হয়ে গেছে। বাকি টিকাকরণও দ্রুত সেরে ফেলতে চাইছে প্রশাসন।

পুজো থেকেই উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায়। সামনেই কালীপুজো। এরপর ভাইফোঁটা, ছটপুজো সহ একাধিক উৎসব আছে। বস্তুত, জানুয়ারি পর্যন্ত একের পর এক উৎসব চলতেই থাকবে। চিকিৎসক সাত্যকি হালদার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এবছর পুজোয় যেরকম ভিড় হয়েছে, তাতে করোনা সংক্রমণ বাড়ারই কথা। আগামী উৎসবগুলোয় দুর্গাপুজোর ভিড়ের যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত প্রশাসনের।''

করোনার উপসর্গ নিয়ে যে অনেক বেশি রোগী চিকিৎসকদের কাছে আসছেন, তা জানিয়েছেন সাত্যকি। তবে একই সঙ্গে তার বক্তব্য, আবহাওয়া বদলাচ্ছে বলেও অনেকে সর্দি-কাশি-জ্বরে ভুগছেন। কিন্তু তা-ও সকলের করোনার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে