মিশরে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়া হচ্ছে

মিশরে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়া হচ্ছে

মিশরে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়া হচ্ছে

জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন মিশরের প্রেসিডেন্ট এল-সিসি। সোমবার ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, দেশজুড়ে যে জরুরি অবস্থা জারি আছে, তা প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন, ''মিশর এখন নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের মরুদ্যান। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জরুরি অবস্থার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না।''

কেন জরুরি অবস্থা

২০১৭ সালে এল-সিসি জরুরি অবস্থা জারি করেন। সেসময় চার্চে দুইটি বিস্ফোরণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। আইএসের সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠী ওই আক্রমণের দায় স্বীকার করেছিল।

প্রথমে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি হয়। তারপর তার মেয়াদ সমানে বাড়ানো হতে থাকে। গত এপ্রিলেও তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। যে সময় বিস্ফোরণ হয়, তখন মিশরে আইএস সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল সরকার। জরুরি অবস্থা জারির ফলে প্রশাসনের হাতে বিপুল ক্ষমতা চলে আসে। মতপ্রকাশ ও জমায়েতের অধিকারও নিয়ন্ত্রিত হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলি বহুবার জানিয়েছে, কড়া ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে মিশরে আসলে সরকারবিরোধী যাবতীয় বিক্ষোভ থামনো হয়েছে। 

২০২০ সালের মে মাসে জরুরি অবস্থা জারি সংক্রান্ত আইনেও সংশোধন করা হয়। প্রেসিডেন্টকে আরো ক্ষমতা দেয়া হয়। সামরিক আদালতের পরিধি বাড়ানো হয়।

মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া

মিশরের মানবধিকার কর্মী হোসাম বাঘাত এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন, তিনি বলেছেন, এর ফলে জরুরি অবস্থার সময় তৈরি স্টেট সিকিউরিটি কোর্টের ব্যবহার বন্ধ হবে। তবে যেসব মামলা ইতিমধ্যে সেই কোর্টে পাঠানো হয়েছে, সেগুলি চলতে থাকবে।

মানবাধিকার গবেষক মাগডি ফেসবুকে লিখেছেন, গত দশ বছর ধরে নিরাপত্তা বাহিনী যে কোনো মানুষকে গ্রেপ্তার করতে পারতো, মেরে ফেলতে পারতো। বিচারব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করলেই রাতারাতি সব বদলাবে না। এর জন্য প্রচুর সময় লাগবে। 

মিশরে মানবাধিকার পরিস্থিতি

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, মিশরে মানবাধিকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। জেলের অবস্থা শোচনীয়।হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিসাব হলো, রাজনৈতিক কারণে, সম্প্রতি ৬০ হাজার মানুষকে জেলে পাঠনো হয়েছে। তারা মিশরের একটি জেল নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও প্রকাশ করছে। সেখানে জেলে কীভাবে অত্যাচার করা হয়, সেটাও বলা হয়েছে।রিপোর্ট জানাচ্ছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলে সরকারি কর্মকর্তারা আইনের অসম্মান করছেন। করোনার পর জেলগুলির অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে