মেসে থাকা ইবি শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয়দের হামলা, আহত ৫

মেসে থাকা ইবি শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয়দের হামলা, আহত ৫

মেসে থাকা ইবি শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয়দের হামলা, আহত ৫

ইবি প্রতিনিধি:তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মকর্তার নেতৃত্বে ক্যাম্পাস সংলগ্ন মেসে থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রদের উপর স্থানীয়দের কর্তৃক হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে ক্যাম্পাস পার্শবর্তী আনন্দনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন সংকট পরিস্থিতিতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের কোন ভূমিকা ছিলো না অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে বারংবার ফোন করা হলেও সঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে পৌছেনি। এ ঘটনায় প্রশাসনের নিরব ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও উপচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শাখা কর্মকর্তা ও ওই এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম ছাত্রদের সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে স্থানীয়দের নিয়ে হামলা করেন। এ সময় তারা মেসের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে একজন গুরুতর জখমসহ পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী কামাল উদ্দিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সুলতান মাহমুদ সুজন, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের রিদয় আহমেদ, সমাজ কল্যাণ বিভাগের মাজহারুল ইসলাম নাইম এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও ভূগোল বিভাগের জুয়েল রানা। মারধরের পর শিক্ষার্থীদেরকে মেসে আটক করে রাখেন হামলাকারীরা। পরে অন্য সহপাঠীরা গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে গুরুতর আহত দুইজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকীদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে আবাসিক হল ও মেসগুলোতে থাকা অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। এসময় এক শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় রেন্টু ও রাজু ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে একত্রিত হতে বলে। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী এলাকার শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় সিনিয়র শিক্ষার্থীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা মেসের এক বড় ভাইয়ের বিদায় উপলক্ষে স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। এতে কিছুটা হইহূল্লোড় হওয়ায় মেসের পাশের বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা অভিযোগ করতে এলেও আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। আমাদের একজন এর প্রতিবাদ করলে কথাকাটি হয়। পরে সেই কর্মকর্তা গিয়ে স্থানীয় লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্ট্ররিয়াল বডির সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোন সাড়া মেলেনি বলেনি জানান শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে ঘটনার কিছু পরে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে তারা উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানায়।

এবিষয়ে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এসে তাদের উপরে হামলা করেছে এই দায়ভার আমি নিব কি করে ? যে কেউ আমার নাম বলতে পারে। প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন।’

এবিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঘটনা শোনার পর ওখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দিনের বেলা বিষয়টি দেখব।’