পাবনা সদরের ৯ ইউপির সবটিতেই নৌকার ভরাডুবি

পাবনা সদরের ৯ ইউপির সবটিতেই নৌকার ভরাডুবি

পাবনা সদরের ৯ ইউপির সবটিতেই নৌকার ভরাডুবি

চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রোববার পাবনার তিন উপজেলায় ১৮ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাবনা সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের সব ক’টিতে অকল্পনীয় শোচনীয় পরাজয় হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের। ৯টির মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেননি। আর ৪টির মধ্যে একটিতে প ম, আরেকটিতে চতুর্থ এবং দু’টি ইউপিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন নৌকার প্রাথীরা।

মালি  ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আকদুল আলিম ২৪ হাজার ভোটের এই ইউনিয়নে পেয়েছেন ২ হাজার ৪শ’৬৪  ভোট। এই ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী ৭ প্রার্থীর মধ্যে তিনি প ম স্থানে রয়েছেন। এখানে ৫ হাজার ৩শ’৯৬ ভোট   পেয়ে জয় লাভ করেছেন আনারস প্রতীকের কবীর আহম্মেদ। এখানে চশমা প্রতীকের নওয়াব আলী খন্দকার  পেয়েছেন ৪ হাজার ২১৬ ভোট। হাজী মোহাম্মদ জয়নাল আলী মোল্লা ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭শ’৯৯  ভোট এবং মেহেদী হাসান বাবন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৬শ’৩৪ ভোট।

গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী শামসুল মন্ডল সবচেয়ে হতাশা উপহার দিয়েছেন। ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে তিনি আছেন তৃতীয় স্থানে। ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী পেয়েছেন ৬২৯ ভোট। এই ইউনিয়নে মোট  ভোটার ৩২ হাজার ২৪৩ জন। ১২ হাজার ৭৭৭ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন আনারস প্রতীকের মোতাহার  হোসেন। ঘোড়া প্রতীকে জিন্নাহ মন্ডল পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৩ ভোট।

দোগাছী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আলতাব হোসেন হয়েছেন চতুর্থ স্থানে। পাবনার আওয়ামী লীগ নেতা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের এই ভাই পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৭ ভোট। এই ইউনিয়নে ১২ হাজার ৫শ’৭৬  ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের আলী হাসান। আনারস প্রতীকের আজমত বিশ্বাস পেয়েছেন ১০ হাজার ৮শ’৫১ ভোট। রজনীগন্ধা প্রতীকের হযরত আলী পেয়েছেন ৯ হাজার ৫শ’৫৮ ভোট। আবু সাঈদ খানের ইউনিয়ন ভাঁড়ারায় নির্বাচনীয় সহিংসতায় চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহতের ঘটনায় নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।

আতাইকুলা ইউনিয়নে নৌকার প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আতিয়ার হোসেন তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। ৩৪ হাজর  ভোটারের ইউনিয়নে তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭৬ ভোট। মোটরসাইকেল প্রতীকের শওকত হোসেন ৮ হাজার ৪শ’৩১ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন। এখানে চশমা প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস পেয়েছেন ৭ হাজার ২শ’৫৭  ভোট।

এর আগে রোববার কয়েকটি বিচ্ছিন্ন বিশৃঙ্খলার ঘটনা ছাড়া পাবনার সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। হিমায়েতপুরের নাজিরপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ও নজরুল ইসলাম হাবু উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্টের বের করে দেয়া এবং চর ঘোষপুর মাদরাসা কেন্দ্র দখলের  চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এতে চরঘোষপুর কেন্দ্রে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া আতাইকুলা ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে।

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে চতুর্থ ধাপে পাবনার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।  কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে  ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার মোতায়েনের পাশাপাশি বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশের মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং, স্ট্যান্ডবাই ফোর্স মোতায়েন করা ছিল। ছিল নজিরবিহীন ভোটারদের ভোট প্রদানের নিরাপত্ত্বার নিশ্চয়িতা।