প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সুজানগরে ছাত্রীকে পিটিয়ে জখম, সহপাঠিদের প্রতিবাদ

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সুজানগরে ছাত্রীকে পিটিয়ে জখম, সহপাঠিদের প্রতিবাদ

ছবি- নিউজজোন বিডি

পাবনা প্রতিনিধি:প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় পাবনার সুজানগরের সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করার প্রতিবাদে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।

বৃহস্পতিার (১৯ মে ) অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিচার দাবি করছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বিকালে ওই ছাত্রী স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে এক বখাটে তাকে নির্মমভাবে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।

এ ঘটনায় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন বাদি হয়ে বখাটে ফাহাদ মোল্লাকে আসামি করে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত বখাটে ফাহাদ (১৭) সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের ফারুক  মোল্লার ছেলে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে বিদ্যালয়টির কয়েকশ’ শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে বিদ্যালয়টির  গেটে বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধন করে। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা  দ্রুতম সময়ের মধ্যে ঘটনার মূল হোতাকে গ্রেফতারের পর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা কবলেন,‘ আমরা নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে চাই। স্কুলে যাতায়াতের সময় বখাটেদের উপদ্রপ ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনণ করেন ।

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত স্কুলছাত্রী জানান, পাশর্^বর্তী ফকিরপুর গ্রামের ফারুক মোল্লার ছেলে ফাহাদ দীর্ঘদিন ধরে আমাকে উত্যক্ত করছিল। প্রায়ই স্কুলে যাতায়াতের সময় গতিরোধ করে প্রেমের প্রস্তাব দিত। আমি এতে রাজি না হওয়ায় সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। বুধবার বান্ধবীদের সাথে স্কুল ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে আবারো ফাহাদ গতিরোধ করে নানা ধরনের প্রস্তাব দিতে থাকে। আমি এতে রাজি না হওয়ায় রাস্তা থেকে টেনে পাশে নিয়ে আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে।

এ সময় ওই শিক্ষার্থীর চিৎকারে বিদ্যালয়ের স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে বখাটে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাল উদ্দিন বলেন, এমন বর্বোরোচিত হামলার ঘৃণা জানিয়ে ওইদিনই রাতে আমি নিজে বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। আমার বিদ্যালয়ে প্রায় নয় শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। তাদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে। আমরা কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে স্বাভাবিক করারও চেষ্টা করছি।

সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার বলেন, আঘাত গুরুতর হলেও এখন ওই শিক্ষার্থী আশংকামুক্ত। আপাতত হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছে।

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, মামলাটি দায়ের হওয়ার পর পরই ওই বখাটেকে পুলিশ তৎপর রয়েছে। রাতে কয়েকটি স্থানে অভিযান করেও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শিগগিরই তাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি।