ইউরোপের সবচেয়ে বড় ন্যাটো বাহিনী গড়তে চান শলৎস
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস
অদূর ভবিষ্যতে জার্মানি ইউরোপের সবচেয়ে বড় প্রথাগত সেনাবাহিনী পেতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। পুতিনের ভ্রূকুটি অগ্রাহ্য করে ইউক্রেনে আরো অস্ত্র সরবরাহের অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
জার্মানির একাধিক সংবাদপত্রের সাথে এক যৌথ সাক্ষাৎকারে শলৎস এসব কথা বলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জার্মান সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তুলতে ১০ হাজার কোটি ইউরো অংকের বিশেষ তহবিলের ঘোষণা করেছিলেন। রোববার প্রধান বিরোধীদের সাথে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সেই লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
এর ফলে শলৎস সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছেন, ন্যাটোর কাঠামোর মধ্যে জার্মানি শিগগিরই ইউরোপের সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনী পেতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে জার্মানি ও দেশটির সহযোগীদের নিরাপত্তা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে বলে ভাবছেন তিনি।
জার্মান সংবাদমাধমের সাথে যৌথ সাক্ষাৎকারে শলৎস ইউক্রেনের সহায়তার প্রশ্নে দেশে-বিদেশে তার সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, জার্মানি ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে, ভবিষ্যতেও করবে। প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলির মাধ্যমে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করে সে দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি করেন জার্মান চ্যান্সেলর।
এ ক্ষেত্রে বিলম্বের অভিযোগ অস্বীকার করে শলৎস বলেন, পূর্বনির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ীই সেই প্রক্রিয়া অগ্রসর হচ্ছে। জার্মানিতে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণও শুরু হয়ে গেছে।
পূর্ব ইউরোপের কিছু দেশে সোভিয়েত আমলের ভারি অস্ত্র অবিলম্বে ইউক্রেনকে সরবরাহ করে জার্মানি সেসব দেশকে বিকল্প অস্ত্র দেবার যে অঙ্গীকার করেছে, তাতেও সমালোচনার কোনো কারণ দেখছেন না ওলাফ শলৎস।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে পোল্যান্ডের অভিযোগ শুনে তিনি অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছেন। চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়ার সাথে এ বিষয়ে যে বোঝাপড়া হয়েছে, তাতে কোনো সমস্যা হয়নি বলে দাবি করেন শলৎস।
সহযোগীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জার্মান সেনাবাহিনীর হাতে বাড়তি সামরিক যানের সংখ্যা খুবই কম। ২০১০ সাল থেকে ব্যয়সংকোচের ফলে এমন সমস্যা রয়েছে। ফলে চটজলদি এমন যান সরবরাহ করা কঠিন।
জার্মানির এআরডি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সাথে অন্য এক সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর স্পষ্ট করে বলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চোখরাঙানি অগ্রাহ্য করে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করে যাবেন। তার মতে, এ বিষয়ে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি পুতিনের সাবধানবাণী মেনে নেবার কোনো প্রশ্ন ওঠে না। যতদিন প্রয়োজন, ইউক্রেনকে সহায়তা করা হবে। সেইসাথে জার্মান সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার উদ্যোগও চালু থাকবে বলে শলৎস আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহান্তে শলৎস ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর সাথে যৌথ টেলিফোন সংলাপে পুতিন পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তার মতে, এর ফলে স্থিতিশীলতা এবং মানবিক সংকট আরো বিপন্ন হবার ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে