তুরস্কের ভেতর দিয়ে ইউরোপে আরো গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাব পুতিনের

তুরস্কের ভেতর দিয়ে ইউরোপে আরো গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাব পুতিনের

সংগৃহীত

তুরস্কের ভেতর দিয়ে আরো বেশি করে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে এই অঞ্চলকে গ্যাস সরবরাহের নতুন একটি কার্যকর কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বৃহস্পতিবার কাজাখস্তানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বজব তায়েব এরদোগানের সাথে এক বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন ভ্লাদিমির পুতিন।

গত তিন মাসে চতুর্থবারের মতো বৈঠক হলো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়েব এরদোগান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে। বৃহস্পতিবার কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সিআইসিএ সম্মেলনে এ দু’নেতার সাক্ষাৎ হয়।

তবে আলোচনায় গুরুত্ব পায় রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস অন্যান্য দেশে সরবরাহের ব্যবস্থা তৈরিতে তুরস্কের কাছে পুতিনের সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি। ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের জন্য তুরস্ককে ব্যবহার করতে চায় রাশিয়া। গ্যাস সরবরাহ করতে তুরস্কে একটি সাপ্লাই হাব তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এ নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হবে। এতে জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি দাম নির্ধারণ করাও সহজ হবে বলে জানান পুতিন।

পুতিন বলেন, ‘গ্যাস সাপ্লাই হাব আমরা একসঙ্গে তৈরি করতে পারি। এটি কেবল সরবরাহের জন্য নয়, দাম নির্ধারণের জন্যও একটি প্ল্যাটফর্ম হবে। কারণ, মূল্য নির্ধারণের সমস্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্যাসের দাম অনেক বেশি। এই হাব হলে আমরা কোনো রাজনৈতিক চাপ ছাড়াই দাম স্বাভাবিক করতে পারব।’

এদিকে, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় নিরাপদে রাশিয়ার শস্য অনুন্নত দেশগুলোতে রফতানির বিষয়ে জোর দেন এরদোগান। ইউক্রেনের শস্য রফতানির জন্য কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার অবরোধের মুখে থাকা বন্দরগুলো খুলে দিতে গত জুলাইয়ে যে চুক্তি হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে, এতে মধ্যস্থতা করে তুরস্ক।

এরদোগান বলেন, ‘আমরা ইস্তাম্বুল চুক্তির অধীন শস্য রফতানি জোরদার করতে এবং তুরস্কের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে রুশ শস্য ও সার স্থানান্তর করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। উন্নত দেশগুলোর পরিবর্তে দরিদ্র দেশগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়া জরুরি। আমি মনে করি এটি করলে স্বল্পোন্নত দেশগুলো উপকৃত হবে।’

উল্লেখ্য, রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর আগে ইউরোপের ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করতো। তবে হামলার পর থেকে সরবরাহ কমতে থাকে। দেশটি বলছে, সরবরাহ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ কারিগরি সমস্যা এবং পশ্চিমাদের আরোপ করা অবরোধ। তবে, ইউরোপের দেশগুলো মস্কোর এই ব্যাখ্যাকে বাতিল করে দিয়ে বলেছে যে দেশটি জ্বালানিকে ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

তবে বৈঠকে ইউক্রেন সঙ্কট সমাধানের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।