মুশফিকের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড রান বাংলাদেশের

মুশফিকের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড রান বাংলাদেশের

ছবি : সংগৃহীত

৪৮ ঘণ্টাও স্থায়ী হলো না দলীয় সর্বোচ্চ ৩৩৮ রানের সংগ্রহ। সিরিজের প্রথম ম্যাচের রেকর্ড দ্বিতীয় ম্যাচে এসেই ভেঙে দিল টাইগাররা, গড়লো নতুন রেকর্ড। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ এখন ৩৪৯! বাংলাদেশকে সাড়ে তিনশো ছুঁই ছুঁই এই সংগ্রহ এনে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, শতক হাঁকিয়েছেন তিনি; যা তার ক্যারিয়ারের নবম শতক।

ইনিংসের শেষ বলে শতক পূরণ করেন মুশফিকুর রহিম, মাত্র ৬০ বলে ১৪ চার আর ২ ছক্কায় তিন অংকের এই ঘর স্পর্শ করেন তিনি। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে যা কোনো বাংলাদেশীট সবচেয়ে দ্রুততম শতক, ভেঙে দিয়েছেন ১৪ বছরের পুরনো সাকিব আল হাসানের রেকর্ড। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৩ বলে শতক ছুঁয়েছিলেন সাকিব।

তামিম ইকবাল নিজেকে দূর্ভাগা ভাবতেই পারেন, পাওয়ার প্লের শেষ বলে রান আউটের ফাঁদে না পড়লে বড় একটা ইনিংস হয়তো তিনিও খেলতে পারতেন। দলের অন্যদের রান উৎসবের দিনে স্ট্রাইকরেটের বিচারে তিনিই যে খানিকটা ম্লান, যদিও তার ব্যাটে এসেছে ৩১ বলে ২৩ রান! যাহোক, অধিনায়কের উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪২ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

তামিম আউট হতেই যেন খোলনলচে থেকে বের হয়ে আসে বাংলাদেশ, বের করে আনেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দু'জনেই তোলে নেন ফিফটি, তবে দু'জনই ফিরেছেন শতক হাতছাড়া হবার আক্ষেপ সঙ্গী করে৷ সমান ৩ চার আর ৩ ছক্কায় ৭১ বলে ৭০ করে আউট হন লিটন, শান্ত আউট হন ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৭৭ বলে ৭৩ রান করে।

লিটনের বিদায়ে ভাঙে শান্তের সাথে তাঁর ৯৮ বলে ১০১ রানের জুটি। তবে আউট হবার আগে নিজের রেকর্ডের খাতা আরো সমৃদ্ধ করছেন লিটন দাস, আজ আরো একধাপ এগিয়ে নিলেন নিজেকে।আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে ২ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এই ব্যাটার। সেই সাথে বাংলাদেশের হয়ে নবম সর্বোচ্চ রানের মালিক বনে গেছেন তিনি। একই দিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম।

লিটন ফেরার পর সাকিব আল হাসানের সাথে ৩৯ রানের জুটি গড়েন শান্ত। তবে ৮ বলের মাঝেই ফেরেন দুজনে, ১৯ বলে ১৭ রান করে সাকিব আর শান্ত আউট হন ৭৩ রান করে৷ দুজনেই গ্রাহাম হোমের শিকার হন। দলীয় সংগ্রহ তখন ৩৩.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯০।

সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। তরুণ তাওহীদ হৃদয়কে আগলে রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে৷ আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন দু'জনেই। বিশেষ করে ছয় নাম্বার পজিশনে বেশ সাবলীলভাবেই খেলছিলেন মুশফিক। আগের ম্যাচে ২৬ বলে ৪৩ রান করে আউট হলেও আজ মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন মুশফিক। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলছিলেন তিনি, এমন মুশফিককে এর আগে খুব বেশী দেখা যায়নি।

অর্ধশতক তোলার পর যেন আরো ধারালো হয়ে উঠে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। মাঠের চারদিকে সাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকেন তিনি, এই মুশফিককে দেখতে পারাও যেন চোখের শান্তি। এদিকে মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন তৌহিদ হৃদয়। সুযোগ পেলেই আক্রমণ করতে থাকেন তিনিও, খেলতে থাকেন উইকেটের চারদিকে। যদিও অর্ধশতক স্পর্শ করতে না পারার আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হয়েছে তাকে। ৪ চার আর ১ ছক্কায় ৩৪ বলে ৪৯ করে ফেরেন হৃদয়।

৪৬.২ ওভারে দলীয় ৩১৮ রানে আউট হন হৃদয়। তার বিদায়ে ভাঙে মুশফিকের সাথে গড়ে তোলা তার ৮০ বলে ১২৮ রানের জুটি। এরপর ইয়াসির আলির সাথে যোগ করেন ১৭ বলে ২১ রান, শেষ এভারে ৭ বলে ৭ করে আউট হন ইয়াসির৷ শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৪৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। জিততে হলে আয়ারল্যান্ডকে করতে হবে ৩৫০ রান।