যৌন নির্যাতনের মামলায় ট্রাম্পের ৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা

যৌন নির্যাতনের মামলায় ট্রাম্পের ৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা

ফাইল ছবি

অবশেষে ট্রাম্পকে যৌন নির্যাতন এবং লেখক ই জিন ক্যারলকে অপদস্ত করার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হলো। নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটান কোর্টের জুরি বোর্ড ৯ মে মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্তের সাথে ট্রাম্পকে ৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেন। জরিমানার এই অর্থ পাবেন ই জিন ক্যারল। 

ডজনখানেকেরও অধিক নারী দীর্ঘদিন থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন-নির্যাতনের অভিযোগ করে এলেও এটাই প্রথম ঘটনা যেখানে আদালত যথাযথ একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। তবে ই জিন ক্যারলকে ট্রাম্প ধর্ষণ করেছেন বলে যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল ৯ সদস্যের জুরি বোর্ড তার সত্যতা পাননি। 

উল্লেখ্য, প্রায় ৩০ বছর আগে ম্যানহাটানে বার্গডর্ফ গুডম্যান স্টোরের ড্রেসিং রুমে ক্যারলকে ট্রাম্প যৌন হামলা, যৌণ নির্যাতন এবং ধর্ষণ করেন বলে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিচার চলাকালে ট্রাম্প আদালতে হাজির হননি এবং ট্রাম্প বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। এটি দেওয়ানি আদালত এবং জুরি বোর্ডের ৯ সদস্যের ৩ জন নারী। তারা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে, ক্যারল তার অভিযোগের পক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছেন। 

এ সময় জুরিবোর্ড আরো উল্লেখ করেন, গত অক্টোবরে ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোস্যাল’ প্ল্যটফরমে ক্যারলের মামলাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে অভিহিত করেছিলেন। মঙ্গলবার জুরিবোর্ডের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাম্প আপিল করবেন বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। জুরিবোর্ডের উপরোক্ত সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করেন আদালতের পেশকার। তা শুনে ক্যারল মাথা নাড়েন এবং তার সম্মতি জ্ঞাপন করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্যারলের মানহানির জন্যেও দায়ী বলে এ সময় পেশকার উল্লেখ করেন। 

এদিন সন্ধ্যায় ক্যারল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমি এই মামলাটি দায়ের করেছি নিজেকে কালিমামুক্ত করতে এবং আমার হারানো জীবন ফিরে পেতে। আজ, বিশ্ব অবশেষে প্রকৃত সত্য জানলো। এই জয় শুধু আমার জন্য নয়, প্রত্যেক নারীর জন্য, যারা তাকে বিশ্বাস করা হয়নি বলে নিদারুন কষ্টে রয়েছেন।’ 

কয়েক দশক ধরেই ট্রাম্প নারীদের কাছে অপ্রতিরোধ্য একজন পুরুষের ইমেজ তুলে ধরেছিলেন। ‘আমার কাছে সেরা যৌনতা ছিল’-এমনটি মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প ১৯৯৯ সালে প্লেবয় ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে। সেখানে বড়াই করেছিলেন তিনি কীভাবে মহিলাদের যৌন হয়রানির পরও কোন ধরনের অপরাধবোধ কাজ করে না। কেউ তাকে দোষীও ভাবার সাহস পায় না। তবে ম্যানহাটানের দেওয়ানি আদালত ট্রাম্পের সে মিথ্যা বড়াই দুমড়ে দিলো বলে সুধীজন মন্তব্য করেন। ট্রাম্প এখন একজন চিহ্নিত অপরাধী হিসেবেও সামাজিক ধিক্কারের মধ্যে থাকবেন। তবে এটি সিভিল কোর্টের শাস্তি হওয়ায় ট্রাম্পকে জেল খাটতে হবে না। তবে এই রায়ের প্রভাব নিদারুনভাবে ট্রাম্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে নির্বাচনী প্রচারণায়। এদিকে, এই রায়ের পর ট্রুথ সোস্যালে ট্রাম্প এক পোস্টে লিখেছেন যে, তিনি এই নারীকে কখনোই চেনেন না। তিনি লেখেন, ‘আমার কোন ধারণাই নেই, কে এই নারী। মামলার নামে একটি সার্কাস মঞ্চস্থ হলো।’