তিন দেশের সঙ্গে পণ্য বিনিময় করবে পাকিস্তান

তিন দেশের সঙ্গে পণ্য বিনিময় করবে পাকিস্তান

পাকিস্তানের পতাকা।

ইরান, আফগানিস্তান ও রাশিয়ার সঙ্গে পণ্য বিনিময়ভিত্তিক ব্যবসা চালু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। এ লক্ষ্যে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিশেষ আদেশ জারি করেছে। পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ আরও বিশেষ কিছু পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে এই ব্যবসা চালু করবে দেশটি।

এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতের ‘ইকোনমিক টাইমস’। সংবাদে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের হাতে যে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত আছে, তা দিয়ে বড়জোর এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। পাকিস্তান সরকার লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি মোকাবিলা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়াভাবে চেষ্টা করছে। মে মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ৩৮ শতাংশে ওঠে। এক বছর ধরেই দেশটিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে।

যেসব পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে ব্যবসা করা যাবে, সরকারের আদেশের সঙ্গে তার একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিমালিকানাধীন সংস্থাগুলোকে অনুমোদন নিয়ে এই বাণিজ্য আলোচনায় অংশ নিতে হবে।

পাকিস্তানের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক সাজিদ আমিন বলেছেন, ইরান ও রাশিয়া থেকে ডলার ছাড়াই পাকিস্তান জ্বালানি ও তেল আমদানি করতে পারে। পাকিস্তানে ডলারের মজুত যে হারে কমেছে, তাতে এই পণ্য বিনিময়ের সুযোগ থাকা দরকার বলে তিনি মত দেন।

সাজিদ আমিন আরও বলেন, বিনিময়প্রথা চালু হলেই যে পাকিস্তান থেকে মুদ্রা পাচার বন্ধ হবে, তা নয়, বিশেষ করে আফগানিস্তান সীমান্তে তো নয়ই। তবে এতে যা হবে তা হলো, ইরান থেকে ডিজেল ও আফগানিস্তান থেকে অন্যান্য পণ্য চোরাপথে আসা বন্ধ হবে; এই চোরাচালান পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

এদিকে ডলার বাঁচাতে পাকিস্তান রাশিয়া থেকে কম দামে জ্বালানি তেল কিনছে, এপ্রিল মাস থেকে যা শুরু হয়েছে। তখন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী মুসাদিক মালিক রয়টার্সকে বলেছিলেন, এ চুক্তির আওতায় পাকিস্তান শুধু অপরিশোধিত তেল কিনবে, পরিশোধিত পণ্য কিছু কিনবে না।

তবে রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা তেলের মূল্য কীভাবে পরিশোধ করা হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি মুসাদিক মালিক। তবে বলেছিলেন, প্রথম চালান ঠিকঠাক এলে দৈনিক গড়ে এক লাখ ব্যারেল তেল কেনা হতে পারে।

এদিকে জ্বালানি চোরাচালানও পাকিস্তানে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মে মাসে পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম পরিবেশক সমিতি অভিযোগ করে, সে দেশের বাজারে যত ডিজেল বিক্রি হয়, তার ৩৫ শতাংশ ইরান থেকে চোরাপথে আসে।

এ ছাড়া পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে বিপুল পরিমাণ পণ্য চোরাচালান হয়, যেমন আটা, গম, চিনি ও সার। এই চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটি সরকার।