মোটরসাইকেল চালক রিফাত হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২

মোটরসাইকেল চালক রিফাত হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২

প্রতীকী ছবি

গাজীপুরে মো: শরীফ হোসেন রিফাত (২০) নামে এক মোটরসাইকেল চালককে হাত-পা বেঁধে তুরাগের মাঝ নদীতে ডুবিয়ে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও নৌকার মাঝিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। রবিবার রাতে তাদের একজনকে গাজীপুর এবং অপরজনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) পারভেজ রানা জানান, গত ৬ জুন  ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন রোদ্রপুর এলাকায় তুরাগ নদীতে ভাসমান শরীফ হোসেন রিফাত নামে একজন পাঠাও চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফারুক হোসেন ৭ জুন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নিহতের স্বজন ও টঙ্গীর এরশাদ নগরের স্থানীয়রা বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন এবং মহাসড়ক অবরোধ করে হত্যার রহস্য উম্মোচন করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।  

তিনি আরো জানান, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১১ জুন রাতে র‌্যাব-১ গাজীপুর ক্যাম্পের একটি দল ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানা এলাকায় অভিযান করে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী তাইজুল ইসলাম ওরফে কাজলকে (৩২) গ্রেফতার করে। কাজল সিটি করপোরেশনের টঙ্গী পূর্ব থানার আব্দুর রশিদের ছেলে। পরে কাজলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত নৌকার মাঝি অপর আসামী গাজীপুর সিটির গাছা থানার মাইনুদ্দিনের ছেলে এমারত হোসেনকে (৩৮) ওই (গাছা) থানাধীন পলাশোনা খেয়াঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা রিফাতকে হত্যার কথা স্বীকার করে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়।
 
র‌্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে কাজল র‌্যাবকে জানায় পাঠাও চালক রিফাত তার পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্যপূর্ণ সর্ম্পক ছিল। আনুমানিক একমাস পূর্বে তাদের মধ্যে ব্যবসায়ীক দেনা পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। রিফাত পাওনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে কাজল ক্ষিপ্ত হয়ে রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ জুন কাজল তার অপর সহযোগী সোহাগের সহায়তায় রিফাতকে ঘুড়তে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ডেকে এনে তুরাগ নদী পার হয়ে তারা সাতাশকান্দি চরে যায় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে তারা নদীর অপর পাশ থেকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। পূর্বের লেনদেনের বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে আসামী কাজল ও সোহাগ ভিকটিম রিফাতকে কিল-ঘুষি মেরে নদীর পাড়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং জালের রশি ও টি-সার্ট দিয়ে রিফাতের হাত-পা বেঁধে টেনে হেঁছড়ে এমারত হোসেনের নৌকায় উঠায় এবং মাঝ নদীর পানিতে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে। স্থানীয় পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ভয়ে রিফাতের মোটরসাইকেল রেখে পাঁয়ে হেঁটে কিছুদূর এসে ইজিবাইকে করে তারা যার যার বাড়িতে চলে যায়।