গাজীপুরে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা, দুই ছেলে গ্রেফতার

গাজীপুরে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা, দুই ছেলে গ্রেফতার

প্রতীকী ছবি

গাজীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে খুন করেছে তার দুই ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ওই দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতের নাম-মো: ওসমান গনি (৯০)। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ উত্তরপাড়ার মার্কেট এলাকার বাসিন্দা। আটককৃতরা হলো- নিহতের দুই ছেলে মাহবুব আলম বাবু (৩৪) ও শরিফুল ইসলাম (৩০)। এদের মধ্যে বাবু নিহতের প্রথম সংসারের এবং শরিফুল দ্বিতীয় সংসারের সন্তান।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানার ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম ও স্থানীয়রা জানান, কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ এলাকার ওসমান গনি দু’টি বিয়ে করেন। পারিবারিক নানা বিষয়াদি নিয়ে ওই দুই সংসারের সন্তানদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়ে আসছিল। সম্প্রতি দ্বিতীয় সংসারের সন্তান শরিফুল বাবার কাছে কিছু টাকা দাবী করেন। টাকা না দেয়ায় ঘরের ফ্রিজ, আইপিএস, টিভিসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বিক্রি করে দেন শরিফুল। 

গত ১৭ জুন (বাবা দিবসের আগের দিন) রাতে শরিফুল ইসলাম বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পার্শ্ববর্তী সারদাগঞ্জের হাবিব মার্কেটের সামনে বসে সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় ওসমান গনির দ্বিতীয় সংসারের অপর সন্তান সফিকুল ইসলাম (৪০) ওইসব মালামাল বিক্রির কারণ জানতে চাইলে ছোট ভাই শরিফুলের সঙ্গে তার কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সফিকুলকে মারধর করতে থাকে ওসমান গনির প্রথম সংসারের সন্তান মাহবুব আলম বাবু ও দ্বিতীয় সংসারের শরিফুল। খবর পেয়ে ওসমান গনি ঘটনাস্থলে এসে তাদের থামাতে গেলে তাকেও এলোপাতাড়ি মারধর ও লাঠিপেটা করে দুই ছেলে বাবু ও শরিফুল। মারধরে বৃদ্ধ ওসমান গনির শরীরের বিভিন্নস্থানসহ বাম চোখে আঘাত পান এবং চোখের পাশের হাঁড় ভেঙ্গে যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহতাবস্থায় ওসমান গণিকে উদ্ধার করে স্থানীয় তেঁতুইবাড়িস্থ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে দুইদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি আসেন তিনি। মঙ্গলবার ভোর রাতে তিনি মারা যান। 

ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম আরো জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের নিহতের দ্বিতীয় সংসারের ছেলে সফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দুই ভাই বাবু ও শরিফুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। 

সফিকুল ইসলাম ও পরিবারের সদস্যরা জানান, ছোট ভাই শরিফুল বেকার। সম্প্রতি সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকের জন্য টাকা না দেয়ায় গত কয়েকদিন আগে চুরি করে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয় সে। এর প্রতিবাদ করতেই বড়ভাই সফিককে মারধর করে বাবু ও শরিফুল। তাদেরকে থামাতে এগিয়ে গেলে তারা বৃদ্ধ বাবাকেও এলোপাতাড়ি মারধর ও লাঠিপেটা করে। এতে তিনি আহত হন।