যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি

সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘পরমাণু যুদ্ধের’ হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজিত গণসমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে ‘প্রতিশোধ যুদ্ধের’ ঘোষণা দিয়েছে লাখো মানুষ। কোরীয় যুদ্ধের ৭৩তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পিয়ংইয়ংয়ে গণসমাবেশ করে এশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের ক্ষমতাধর এই দেশটি।

আয়োজিত সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে ‘প্রতিশোধ যুদ্ধের’ স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক একটি প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়া বলেছে, একটি পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বেপরোয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

কোরিয়া যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে বিশাল সব জনসমাবেশ করে উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা জানিয়েছে। প্রথকভাবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘পারমাণবিক যুদ্ধের’ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে।  


সোমবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, রবিবার অনুষ্ঠিত সমাবেশে রাজধানী জুড়ে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শ্রমজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থী অংশ নেয়। রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, একটি বিশাল স্টেডিয়ামে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়েছে। যাতে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডে ছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুরো ভূখণ্ড আমাদের হামলার গোলার আওতার মধ্যে। সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্র শান্তি ধ্বংসকারী ইত্যাদি স্লোগান। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধ্বংস’ করার জন্য ‘প্রতিশোধমূলক যুদ্ধের’ প্রত্যয় জানিয়ে স্লোগান দেয় বলে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে।  

কেসিএনএ বলেছে, উত্তর কোরিয়ার এখন ‘সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রকে শাস্তি দেওয়ার মতো পরম শক্তিশালী অস্ত্র’ আছে আর ‘এই ভূমির প্রতিশোধ গ্রহণকারীরা শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে জ্বলছে। এ উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র কোরীয় উপদ্বীপ অঞ্চলে কৌশলগত অস্ত্র পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।  যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তত্পরতা ওপর নজরদারি জোরদার করার জন্য উত্তর কোরিয়া শিগিগরই তাদের প্রথম সামরিক গোয়েন্দা উপগ্রহ উেক্ষপণের জন্য আরেকটি উদ্যোগ নিতে পারে বলে ঐ অঞ্চলে ও ওয়াশিংটনে উদ্বেগ বিরাজ করছে। 

গত ৩১ মে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয় উত্তর কোরিয়া। যেটি সাগরে বিধ্বস্ত হয়। পিয়ংইয়ংয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে সামরিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে তার নজরদারি বাড়াতে প্রথম গুপ্তচর কৃত্রিম উপগ্রহ আবারও পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। তবে এই প্রচেষ্টায় সফল হবে কি না তাতেও উদ্বেগ রয়েছে কিম জন উন প্রশাসনের। দেশটির এ ধরনের স্যাটেলাইট উেক্ষপণের প্রচেষ্টাকে হুমকি হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র, মিত্র জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এ বছর রেকর্ড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উ. কোরিয়া। ফলে কোরীয় উপদ্বীপটিতে উত্তেজনা তুঙ্গে। পারমাণবিক অস্ত্র সজ্জিত উত্তর কোরিয়া বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র পরীক্ষা করে চলছে, এগুলোর মধ্যে তাদের বৃহত্তম আন্তর্মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রও আছে। এসব পরীক্ষা নিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার ও দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ পর্যন্ত চলা যুদ্ধ কোনো চুক্তি ছাড়াই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হওয়ায় তাত্ত্বিকভাবে তারা এখনো যুদ্ধরতই আছে।