হাঁসের খামার ব্যবসায় স্বাবলম্বী এক দিনমজুর

হাঁসের খামার ব্যবসায় স্বাবলম্বী এক দিনমজুর

ছবিঃ সংগৃহীত।

একসময়ের দিনমজুর জিল্লুর রহমান এখন হাঁসের সফল খামারি। তার খামারে এক হাজার হাঁস। যার মূল্য পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। প্রতি বছর হাঁস বিক্রি করে দুই থেকে তিন লাখ টাকা আয় করেন জিল্লুর। খামার করে সফল হয়েছেন তিনি। অভাব-অনটনের সংসারেও এসেছে সচ্ছলতা। স্থানীয়দের কাছে এখন তিনি একজন সফল হাঁসের খামারি। তার দেখাদেখি ওই এলাকায় আরো আট-নয়জন উদ্যোক্তা হয়েছেন। তাদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন জিল্লুর।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের মাদনপুরের জিল্লুর রহমান গ্রামে হাঁসের বাচ্চা বিক্রি করতে আসা লোকের কাছ থেকে ১০টি বাচ্চা কিনেন। এরপর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। চার-পাঁচ বছর ধরে এই ব্যবসায় রয়েছেন তিনি। দিনমজুর থেকে এলাকাবাসীর কাছে হয়ে উঠেছেন সফল হাঁসের খামারি। তিনি এখন এক হাজার হাঁস পালন করছেন।

জিল্লুর রহমান বলেন, ‘অন্যের বাড়িতে অথবা জমিতে কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাতাম। এবার বগুড়া থেকে এক হাজার বাচ্চা কিনে এনেছি। স্বামী-স্ত্রী মিলে দিনভর দেখাশোনা করি। গ্রামে ধান কাটার পর সারা দিন জমিতে হাঁসগুলো ছেড়ে দিয়ে খাবার খাওয়াই। মাঝেমধ্যে শাকসবজি সেদ্ধ এবং ফিডও খাওয়াই। ওষুধ খাওয়াই, ভ্যাকসিন দিই। তিন মাস পর হাঁসগুলো বিক্রির উপযোগী হবে।’

হাঁসের ডিম বিক্রি করে ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হবে। প্রতি বছর দুবার হাঁস বিক্রি করে দু-তিন লাখ টাকা লাভ হয়।

জিল্লুর বলেন, আসলে যারা বেকার, তারা ইচ্ছে করলেই এই ব্যবসা করে বেকারত্ব দূর করতে পারেন। এজন্য প্রবল ইচ্ছা আর ধৈর্য থাকা দরকার। পাশাপাশি সরকারি সহায়তা এবং প্রাণিসম্পদ বিভাগের তদারকি ও রোগবালাই সম্পর্কে পরামর্শ দরকার।

একই গ্রামের যুবক রফিকুল ইসলাম বলেন, দারিদ্র্য ঘোচাতে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করেছিলাম। কিন্তু জিল্লুর ভাইয়ের সফলতা দেখে তার পরামর্শে প্রথম ধাপে ৪০০ হাঁসের বাচ্চা নিয়ে খামার করেছি। আগামীতে আরো বড় পরিসরে বেশি হাঁসের খামার গড়ে তোলার ইচ্ছা আছে।

গাইবান্ধার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাছুদার রহমান বলেন, চারণভূমি ও খালবিলে হাঁস পালনের ব্যয় কম, লাভ বেশি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে হাঁসের খামারিদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।