হতদরিদ্রদের পাশে কুবির বিদ্যানন্দ 'সিপিএ' টিম

হতদরিদ্রদের পাশে কুবির বিদ্যানন্দ 'সিপিএ' টিম

কুবি প্রতিনিধি

মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশব্যাপী চলছে লকডাউন। এতে নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। যেসব শিক্ষার্থী টিউশন করে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক খরচ বহন করত কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কারণে থেমে যেতে হয়েছে সেই অসহায় শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একদল স্বেচ্ছাসেবী তরুন। নাম দিয়েছে 'সিপিএ' তথা কুবিয়ানদের পাশে আমরা।

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ টি পরিবারকে অন্তত ১০ দিনের খাদ্যদ্রব্য সহায়তা প্রদান করেছে দলটি। তবে আরও বেশি সহায়তা করতে হলে প্রয়োজন বেশি পরিমাণে অনুদান। যা সাহস যোগাবে দলের কর্মীদের।

টিমের সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের মহামারীতে সবার স্বাভাবিক কার্যক্রম একেবারেই স্থিমিত হয়ে পড়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনেকেরই পরিবার এ সমস্যার কারণে সংকটে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাদের সমস্যা তাদের জন্য সামর্থ্যবানরা যাতে এগিয়ে আসে। আমরা গত দুই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থীর পরিবারের জন্য নূন্যতম ১০ দিনের খাবারের ব্যবস্থা হয় এমন টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষার্থীরা এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের অনেকেও এগিয়ে এসেছে। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সংকটে পাশে দাঁড়াতে পারবো। তাই সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। ’

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তারেক রহমান জানান, মানুষের জন্য কাজ করতে পারাটা আমার জন্য সৌভাগ্যের, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করতে পারার অনুভূতিটা বলে বুঝাতে পারব না। আমাদের এই সেবাটাতে সরাসরি শিক্ষার্থীদের সাথে দাতার সম্পর্ক করে দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা বড় ফান্ড গঠনের চেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর পরিবারকে সাহায্য করার প্রায়াস নিয়ে কাজ করছি।

ইংরেজি বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম হানিফ বলেন, মানুষের জন্য কাজ করতে পারা আল্লাহর পরম রহমতের ব্যাপার।বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করতে পারলে সবসময়ই অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।যারা আমাদের এই মহতী কাজে এগিয়ে এসেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।যারা সংগ্রাম করে পড়াশোনা করছে তাদেরকেও লাল সেলাম।আর,আমরা আশা করি দিন দিন আমাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আমরা সফল হবো ইনশাআল্লাহ

টিমের আর এক সদস্য নুরুল মোস্তফা বলেন,‘আমি মনে করি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিবারের মতো। পরিবারে যেমন সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, চাওয়া-পাওয়া, সমস্যা-সমাধানে পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে আসি ঠিক একইভাবে কুবি পরিবারের ভাই বোনদের জন্যও "সিপিএ"র ক্ষুদ্র এই প্রচেষ্টায় অংশীদার হওয়া। অন্যান্য দেশের মতো মহামারী করোনার কারণে সারাদেশ লকডাউনে রয়েছে, এমতাবস্থায় অনেক কুবিয়ান এবং তাদের পরিবারকে পরিস্থিতির কারণে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ,তাদের সহযোগিতায় কিছু করতে পারা সু-ভাগ্যের বিষয়ও বটে। কুবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ যারা সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে তাদের জন্য দোয়া এবং অফুরন্ত ভালবাসা ।