আড়াই বছর পর হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

আড়াই বছর পর হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

প্রতীকী ছবি

প্রায় আড়াই বছর আগে সিলেট শহরতলীর খাদিমপাড়াস্থ দলইপাড়ার এলাকার একটি নির্জন বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল শাহরিয়ার নামে এক কিশোর মরদেহ। ক্লু-লেস এই এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যের কারণ খুঁজতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে বিভিন্ন তদন্ত কর্মকর্তাকে। অবশেষে প্রায় আড়াই বছর পর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ। কিশোর গ্যাংয়ের অন্তর্দ্বন্দ্বে খুন হয় শাহরিয়ার। হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল ৫ জন। তাদের সবাই কিশোরগ্যাংয়ের সদস্য। 

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডি সিলেট অফিসের বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা। 

গ্রেফতারকৃতরা হলো- সিলেট নগরীর ঘাসিটুলার ৭৫নং বাসার আবদুল কাদিরের ছেলে সেলিম আহমদ (২১) ও নবাবরোডের আবুল হোসেনের ছেলে আসানুর (১৭)। এর মধ্যে সেলিমের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব থানায় ও আসানুরের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায়। সিলেট নগরীতে তারা পরিবারের সাথে ভাড়া থাকতো। খুন হওয়া কিশোর শাহরীয়ার (১৫) ঘাসিটুলা এলাকার মো. সেলিমের ছেলে। 

পুলিশ সুপার জানান, ২০২১ সালের ২৩ জানুযারি শাহরিয়ারকে একটি অটোরিকশা করে খাদিমপাড়াস্থ দলইপাড়ার জনৈক মোখলেছুর রহমানের লিচু বাগানের পাশে ছড়ায় নিয়ে হত্যা করে পাঁচ সহযোগী। হত্যাকান্ডে জড়িত সবাই কিশোরগ্যাংয়ের সদস্য ছিল। শাহরিয়ারের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। লাশ উদ্ধারের পর পরিচয় সনাক্ত করতে না পেরে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়। পরে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মুহাম্মদ শামসুল হাবিব খুন হওয়া কিশোরের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করেন। ছবি দেখে ঘাসিটুলার মো. সেলিম ওই কিশোর তার ছেলে হিসেবে দাবি করেন। পরবর্তীতে ডিএনএ টেস্টে প্রমাণ হয় লাশটি মো. সেলিমের ছেলে শাহরীয়ারের। 
দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বুধবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ সেলিম আহমদ ও আসানুরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডের দায়ও স্বীকার করেছে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’ও উদ্ধার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানান, শাহরীয়ার ও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। শাহরীয়ারের বড় ভাইও কিশোরগ্যাংয়ের সদস্য। সে কথায় কথায় গ্যাংয়ের সদস্যদের ধমকাতো, ভয় দেখাতে। মাঝে মধ্যে নির্যাতনও করতো। গ্রুপের অন্য সদস্যের উপর বড় ভাইয়ের দাপট খাটাতো শাহরীয়ারও। শাহরীয়ারের বড় ভাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। জেল থেকে ভাই বের হলে শাহরীয়ারের দাপট আরও বেড়ে যাবে এই আশঙ্কায় তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে