শীর্ষ বন্দরের তালিকায় ৩ ধাপ পেছাল চট্টগ্রাম

শীর্ষ বন্দরের তালিকায় ৩ ধাপ পেছাল চট্টগ্রাম

ফাইল ছবি।

কনটেইনার পরিবহনে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ সমুদ্রবন্দরের তালিকায় তিন ধাপ পিছিয়েছে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দর। শিপিং বিষয়ক বিশ্বের পুরনো ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’ ২০২৩ তালিকায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম অবস্থানে নেমে এসেছে। গত বছর ২০২২ সালে এই অবস্থান ছিল ৬৪তম।

২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরের বার্ষিক কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব বিবেচনায় নিয়ে লন্ডনভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্ট গত সপ্তাহে ‘১০০ বন্দর ২০২৩’ শীর্ষক তালিকা প্রকাশ করেছে।

লয়েডস তালিকা মতে, বিশ্বের ১০০ শীর্ষ বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ধারাবাহিকভাবে গত এক দশকে ৩০ ধাপ এগিয়েছিল। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৮৬তম, ২০১৫ সালে ৮৭তম, ২০১৬ সালে ৭৬তম, ২০১৭ সালে ৭১তম, ২০১৮ সালে ৭০তম, ২০১৯ সালে ৬৪তম, ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ছিল ৫৮তম। আর ২০২১ সালে ছিল ৬৭তম।

২০২২ সালে অবস্থান হয়েছে ৬৪তম।

তালিকার অবস্থান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচির ওমর ফারুক বলছেন, বিশ্বমন্দার প্রভাব, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব এবং দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাশ্রয়ে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি সীমিত করার কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে প্রভাব পড়েছে। এর ফলেই চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান বদলে গেছে। সামনে আমদানি বাড়লে আবারও আগের অবস্থানে ফিরে আসব।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনের চিত্র থেকে দেশের মোট আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সার্বিক প্রমাণ মেলে। অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে দেশের মোট আমদানির ৮২ শতাংশ আসে; আর রপ্তানি পণ্যের ৯১ শতাংশই যায় এই বন্দর দিয়ে।

জানা গেছে, ২০২১ সালের আগ পর্যন্ত লয়েডস লিস্ট তালিকায় প্রতিবছরই চট্টগ্রাম বন্দর আগাচ্ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে বৈদেশিক বাণিজ্যে অগ্রগতি ও বিশ্বের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হলে ৯ ধাপ পিছিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম অবস্থানে চলে যায়। পরের বছর ধাক্কা করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে আবারও তিন ধাপ এগিয়ে ৬৪তম স্থানে উঠে আসে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর।

এখন বিশ্বমন্দার কবলে পড়ে আবারও অবস্থান পেছাল।

 

লয়েডস লিস্টের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর মোট ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪ একক কনটেইনার ওঠানামা করেছে, যা আগের ২০২১ সালের তুলনায় ২.২ শতাংশ কম। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দর মোট ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৮ একক কনটেইনার ওঠানামা করেছিল, যা এর আগের ২০২০ সালের তুলনায় ১৩.২ শতাংশ বেশি ছিল।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির বাইরে বাংলাদেশ নয়, আর চট্টগ্রাম বন্দরও এর বাইরে নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কায় আমদানি কমেছে। এর সাথে যোগ হয়েছে ডলার সংকট। ফলে আমদানি কম হওয়া মানেই চট্টগ্রাম বন্দরে এর প্রভাব পড়া। আর বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় পোশাকশিল্পের রপ্তানি আদেশও অনেক কমেছে। এই সময়ে বন্দরের দক্ষতা ভালোই ছিল। এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠলে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানও বাড়বে।