ঢাকায় রবিবার ‌‌‘এক মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি

ঢাকায় রবিবার ‌‌‘এক মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি

ঢাকায় রবিবার ‌‌‘এক মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি

শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে রবিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ১০টা ১ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে ‘১ মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।সচিব বলেন, ‘শব্দদূষণ বন্ধ করি, নিরব মিনিট পালন করি’- স্লোগানে ঢাকা শহরে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।

তিনি বলেন, কর্মসূচিটি সফল করতে ঢাকা শহরের ১১টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান যথা- ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে, শাহবাগ মোড়, উত্তরা, বিজয় সরণী মোড়, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর, গাবতলী, মগবাজার, মহাখালী, গুলশান-১, কমলাপুর, বৌদ্ধমন্দির ও যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় ১৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল-কলেজের স্কাউট সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহন মালিক সমিতির সদস্যরা ব্যানার, ফেস্টুনসহ উপস্থিত থেকে মানববন্ধন করবেন।তিনি বলেন, ‘মানববন্ধন থেকে গাড়ি চালকদের মধ্যে শব্দসচেতনতামূলক লিফলেট, স্টিকার বিতরণ করা হবে। ওই ১ মিনিট হর্ন বাজানো বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হবে।’

পরিবেশ সচিব বলেন, ‘শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অতিমাত্রায় শব্দদূষণের কারণে কানে কম শোনা, আংশিক বা পুরোপুরি বধিরতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা এবং মনোসংযোগ নষ্টসহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যা, গর্ভবতী মায়েদের অকাল গর্ভপাত, গর্ভস্থ বাচ্চা বধির বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর জন্ম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শব্দদূষণের ফলে দেশের মানবসম্পদ তথা সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।’সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশবাসীকে মুক্ত রাখার জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প' বাস্তবায়ন করছে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবহন চালক, কারখানা ও নির্মাণশ্রমিক, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, ইমাম, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

সচিব জানান, শব্দসচেতনতামূলক থিম সং, টিভিসি, রেডিও ড্রামা ও ডকুমেন্টারি নির্মাণ ও প্রচার করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার কাজ চলমান। শব্দ সচেতনতামূলক বিলবোর্ড, সাইন বোর্ড স্থাপন, লিফলেট, স্টিকার, মূদ্রণ ও বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। নিয়মিতভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা যুগোপযোগী করা হচ্ছে।

বর্তমানে ঢাকা শহরের শব্দদূষণ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে জানিয়ে পরিবেশ সচিব বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে সচিব জানান, আমরা শব্দ দূষণের উৎস চিহ্নিত করেছি। শব্দ দূষণের প্রধান খাত হিসেবে পরিবহন খাতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গাড়ি চলাচল ও অযথা হর্ন বাজানোয় শব্দ দূষণ হয়। নির্মাণ খাত, কলকারখানা থেকেও শব্দ দূষণ হচ্ছে।পরিবহন খাত থেকে সব থেকে বেশি শব্দ দূষণ হওয়ায় বিআরটিএ ও বিআরটিসির সঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও জানান সচিব ফারহিনা আহমেদ।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা একা সক্ষম হলে হবে না। আইনটি সবাইকে সমানভাবে বুঝতে হবে এবং জানতে হবে। মোবাইল কোর্ট করলে যানজট হয়। ফলে বাস্তবতার নিরীখে আমরা এনফোর্সমেন্টে যেতে পারছি না। আমি ব্যর্থ বলব না, প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।তিনি আরও বলেন, ঢাকাকে শব্দহীন করতে আমাদের প্রকল্প চলমান আছে, আরও একটি প্রকল্প আসবে। এসব প্রকল্পের মাধ্যম শব্দ দূষণ রোধ করব আমরা।

সূত্র : ইউএনবি