বৃদ্ধ বাবাকে রাস্তায় ফেলে গেল ছেলে, দায়িত্ব নিলেন ইউএনও

বৃদ্ধ বাবাকে রাস্তায় ফেলে গেল ছেলে, দায়িত্ব নিলেন ইউএনও

ছবিঃ সংগৃহীত।

অসুস্থ বৃদ্ধকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার কথা বলে মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে যায় ছেলে। 

পরে ওই বৃদ্ধের দায়িত্ব নিয়ে হাসাপাতালে ভর্তি করান চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাপস শীল। 

 

শুধু তাই নয়, হাসপাতালে ভর্তির সময় অভিভাবকের স্থানে নিজের নাম লেখান এ ইউএনও। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। 

এর আগে ১৫ অক্টোবর ‘এক সপ্তাহ ধরে ছেলেদের অপেক্ষায় মহাসড়কে পড়ে আছেন বৃদ্ধ’ —এই শিরোনামে যুগান্তর অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ওই বৃদ্ধকে নিয়ে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ওই হাসপাতলে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৭০ বছর বয়সি ওই বৃদ্ধ। 

 

জানা গেছে, রোববার ১০টায় নিজে গাড়ি চালিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনার গোবিন্দপুর স্টেশনে গিয়ে ওই বৃদ্ধের মুখ থেকে এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেন তাপস শীল। 

 

এমন অমানবিক ঘটনা দেখে ধুলোবালি মাখা ওই বৃদ্ধের গায়ের দুর্গন্ধকে আপন করে মানবিকতার পরিচয় দিয়ে নিজের গাড়িযোগে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তিনি। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে অভিভাবকের স্থানে নাম লেখান ইউএনও নিজেই।  

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান জানান, ইউএনও স্যার রাতে ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে চিকিৎসা চলছে। ওই বৃদ্ধের বাম হাত ও বাম পা প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত। 

 

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাপস শীল যুগান্তরকে জানান, রাস্তায় বৃদ্ধ পড়ে থাকার বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারি। পরে মহাসড়কের গোবিন্দপুর স্টেশনের আশরা রাস্তার মাথা থেকে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক। 

 

তিনি আরও বলেন, তার নাম ও ঠিকানা যাচাই-বাছাই করে পরিবারের লোকজনদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ঘটনাটি আগে জানতে পারলে আরও ভালো হতো। এভাবে লোকটিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে হতো না।

প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার গোবিন্দপুর ফুটওভার ব্রিজের কাছে হুইলচেয়ারে বসা এক অসুস্থ বৃদ্ধকে দেখেন স্থানীয়রা। রোদ-বৃষ্টিতে থাকা কয়েক দিন একই স্থানে দেখে খোঁজ নিতে শুরু করেন স্থানীয়রা। 

 

পরে জানতে পারেন, গত ৫ অক্টোবর রাতে ওই বৃদ্ধের ছেলে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার কথা বলে ওই ফুটওভার ব্রিজের পাশে রেখে গেছেন।

 

ওই বৃদ্ধের দেওয়া তথ্যমতে, তার নাম চাঁন মিয়া, গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ভবানী জীবনপুরসংলগ্ন নয়নপুর গ্রামে। তার বড় ছেলের নাম হারুনুর রশিদ, মেজো ছেলের নাম মঈন উদ্দিন ও ছোট ছেলের নাম জসিম উদ্দিন।