সেমিফাইনালে যেতে কোন দলের এখন কী করণীয়?

সেমিফাইনালে যেতে কোন দলের এখন কী করণীয়?

সেমিফাইনালে যেতে কোন দলের এখন কী করণীয়?

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ জমে উঠেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় এই টুর্নামেন্টে নতুন একটা মোড়ে নিয়ে এসেছে এখান থেকে এমনও হতে পারে চারটি দলের ১২ পয়েন্ট এবং তখন হিসেব করা হবে কোন দল কতো ম্যাচ জিতেছে এবং নেট রান রেট কত।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর আট ম্যাচ খেলে পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট এখন সমান- আট।অন্যদিকে, এক ম্যাচ কম খেলা আফগানিস্তানও আছে সেমিফাইনালের দৌড়ে তাদের পয়েন্টও আট।

ফখর জামানের মনে রাখার মতো একটা ইনিংসে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে রইলো পাকিস্তান - ১১টি ছক্কা হাঁকিয়ে ফখর জামান ৮১ বলে ১২৬ রান তোলেন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত।নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের এই জয়ের পর অনেকেই এখন ১৫ই নভেম্বর, কলকাতার ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে ভারত-পাকিস্তান সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছেন।

অস্ট্রেলিয়ার ভাগ্য কাদের হাতে?

অস্ট্রেলিয়ার এখন সাত ম্যাচে ১০ পয়েন্ট, তবে আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ বাকি অস্ট্রেলিয়ার।চৌঠা নভেম্বর রাতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া।অসিদের জন্য তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে ওঠা এখন অনেকটাই সম্ভব।

মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে জয় পেলেই পয়েন্ট তালিকায় অস্ট্রেলিয়ার পাশে কোয়ালিফাইড লেখা উঠবে।এমনকি আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরে গেলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১ই নভেম্বর পুনেতে যদি জয় পায় অস্ট্রেলিয়া তাহলেও তারা সেমিফাইনালে উঠে যাবে।

অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তানের নেট রান রেটের ব্যবধানও অনেক বেশি- অস্ট্রেলিয়ার প্লাস দশমিক নয় দুই চার, আর আফগানিস্তানের মাইনাস দশমিক তিন তিন।যদি অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেও যায় তখন নেট রান রেটের হিসেব করা হবে।আবার নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তান যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে হেরে যায়, সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া শেষ দুই ম্যাচে হারলেও সেমিফাইনালে জায়গা পেয়ে যাবে।

আফগানিস্তানের করণীয় কী?

আফগানিস্তানের জন্য এখন সহজ সমীকরণ - কঠিন রাস্তা হয়ে গেছে।আফগানিস্তান নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে জিতে গেলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত, এখানে কোনও 'যদি' 'কিন্তু' থাকবে না।তবে 'কঠিন রাস্তা' কারণ শেষ দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া।আফগানিস্তানের মাইনাসে থাকা নেট রান রেটও একটা সমস্যা।

সেমিফাইনালের আশা এখনও যেসব দল রাখছে তাদের মধ্যে আফগানিস্তানের নেট রান রেট সবচেয়ে কম।যদি পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ড তাদের শেষ দুটি ম্যাচে যথাক্রমে ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে যায়, সেক্ষেত্রে, দক্ষিণ আফ্রিকা অথবা অস্ট্রেলিয়া যে কোনও একটি দলকে হারালেই আফগানিস্তান পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চারে জায়গা করে নেবে।

নিউজিল্যান্ডের সামনে কী পরিস্থিতি?

নিউজিল্যান্ড যেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল, এখন আর ঠিক সেভাবে চালিয়ে নিতে পারছে না।চার ম্যাচে চার জয় নিয়ে নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট ছিল আট।এখন আট ম্যাচ শেষেও নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট আট, কারণ শেষ চার ম্যাচের সবকটিই হেরেছে কিউয়িরা।

এখন নিউজিল্যান্ড শেষ ম্যাচে জিতলেও বাদ পড়তে পারে, যদি অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় এবং আফগানিস্তান নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে জয় পায়।

নিউজিল্যান্ডের জন্য এখন আফগানিস্তানের শেষ দুটি ম্যাচে হার গুরুত্বপূর্ণ, সাথে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের জয়টাও নিশ্চিত করতে হবে।পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তান যদি শেষ পর্যন্ত ১০ পয়েন্টে থাকে- সেক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে নিউজিল্যান্ড নেট রান রেটে এগিয়ে থাকবে।

নিউজিল্যান্ডকে নেট রান রেটে টপকাতে পাকিস্তানের অন্তত ১৩০ রানের ব্যবধানে জিততে হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।কিন্তু যদি বৃষ্টিতে নিউজিল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি ভেসে যায়, সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডে পাবে নয় পয়েন্ট।তখন কেইন উইলিয়ামসনের দলটির পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের হার প্রত্যাশা করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।

পাকিস্তানের কী করার আছে এখন?

পাকিস্তান আট ম্যাচ খেলার পর চার ম্যাচে জয় পেয়ে আট পয়েন্ট তুলেছে।গত সপ্তাহেও মনে হচ্ছিল পাকিস্তান সেমিফাইনালে খেলতে পারবে না।বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে এখন সেমিফাইনালের দৌড়ে ভালোভাবেই রয়েছে পাকিস্তান।

তবে পাকিস্তানের একটা ম্যাচ বাকি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, সেটি শুধু জিতলেই হবে না, বাকিদের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে।যেমন নিউজিল্যান্ড যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পেয়ে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকে এবং অস্ট্রেলিয়া তাদের বাকি দুটি ম্যাচের একটিতেও জয় পায়, তাহলে পাকিস্তান বাদ পড়বে।আবার আফগানিস্তান যদি নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে জয় পায় সেক্ষেত্রেও পাকিস্তান বাদ পড়বে।

পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় যদি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা জয় পায় এবং শ্রীলঙ্কা নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়।একইসাথে আফগানিস্তান নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে হেরে যায়, তখন তারা নেট রান রেটের হিসেব ছাড়াই সেমিফাইনালে চলে যাবে।

ইংল্যান্ড বিধ্বস্ত হওয়ার পর বাটলার কী বলছেন?

এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে বাজে পারফর্ম করা অধিনায়কদের তালিকায় থাকবেন সাকিব আল হাসান এবং জস বাটলার।তবে সাকিবের বল হাতে কিছু উইকেটের কারণে হয়তো জস বাটলারকে নিয়েই আলোচনাটা একটু বেশি হচ্ছে।আবার জস বাটলার চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক তাই প্রত্যাশাও থাকে বেশি।এবারের বিশ্বকাপে আট ম্যাচে ১৫ গড়ে ১০৬ রান তুলেছেন জস বাটলার।

আহমেদাবাদে গত রাতে ৩৩ রানের হারের পর ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বলেন, “আমি টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ব্যাটিং উপভোগ করছিলাম। তাই এবার ব্যাটিংটা কেন এমন হলো ঠিক জানিনা।”অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, 'অধিনায়কত্বের চাপে কি তবে ব্যাটিংয়ের এই হাল?'বাটলার বললেন, “শুধু একদিকে আঙ্গুল তোলাটা ঠিক হবে না। কারণ আমি ভারতে অনেক ক্রিকেট খেলেছি, পারফর্ম করেছি আইপিএলে। অধিনায়ক হিসেবে আমার সামনে থেকে পারফর্ম করা উচিৎ ছিল, সেটা আমি পারিনি এবার।”

ওদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পারফরম্যান্সের পর অ্যাডাম জাম্পা বলেছেন, সবচেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন তিনি এই ম্যাচটা খেলে।ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ২৯টা রান তিনি করেছেন, বল হাতে ১০ ওভার বল করে ২১ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন।ডাউইড মালান, বেন স্টোকস ও মইন আলীর উইকেট নিয়েছেন জাম্পা।জাম্পা এখন ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক।

সূত্র : বিবিসি