সিরাজগঞ্জে বাবা-মায়ের জমি নিয়ে ১৫ বছর ধরে দুই ভাইয়ের বিরোধ

সিরাজগঞ্জে বাবা-মায়ের জমি নিয়ে ১৫ বছর ধরে দুই ভাইয়ের বিরোধ

ছবিঃ সংগৃহীত।

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বাবা-মায়ের সম্পত্তি থেকে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ছোট ভাইকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে মেজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

শনিবার (৪ নভেম্বর) রাতে সিরাজগঞ্জ শহরের দৈনিক কলম সৈনিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ছোট ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৮) ও তার স্ত্রী তাছলিমা খাতুন এ অভিযোগ করেন।

অভিযুক্ত রেজাউল হক মিয়া (৬৬) উপজেলার মুগবেলাই গ্রামের মৃত আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে। তিনি পৈতৃক সম্পত্তি নিজের কব্জায় রেখে উল্টো ছোট ভাই ও তার স্ত্রীকে সাজানো ছয়টি মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা আবুল হোসেন মিয়া ১৯৮১ এবং মা ২০০২ সালে মারা যান। আমি তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছোট। ২০০৩ সালে বড় ভাই শামছুল আলম মারা যান। এরপর থেকে মেজ ভাই রেজাউল হক বাবার তিন বিঘা ২৯ শতক ও মায়ের নামে ৩১ বিঘা ২৯ শতক জমি দেখভাল করছিলেন। ২০০৮ সালের দিকে আমি ওয়ারিশ হিসেবে জমি বন্টন করতে চাইলে আমার সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হন ভাই রেজাউল। একপর্যায়ে তিনি তার স্বার্থ হাসিল করতে আমি ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একে একে ছয়টি মামলা করেন। জমির ভাগ চাওয়ায় প্রথমে ২০০৮ সালের দিকে দেড় কোটি টাকা দাবি করে মামলা করেন।’

‘মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী মা-বাবা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ সূত্রে আমরা ওই সম্পত্তির দাবিদার ও হকদার। কিন্তু তিনি সম্পত্তির লোভে পড়ে আমার প্রাপ্য সম্পত্তি বুঝে না দিয়ে উল্টো ছয়টি মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।’

জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী তাছলিমা খাতুন শিক্ষকতা পেশায় রয়েছি। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান, কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজ, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের দারস্ত হই। তারা একাধিকবার মীমাংসা করার চেষ্টা করলেও মেজ ভাই তাদের মানেননি। পরবর্তী সময়ে কোনো কূলকিনারা না পেয়ে আমাদের নিকটাত্মীয় সাবেক মন্ত্রিপরিষদের সচিব কবির বিন আনোয়ারের কাছে যাই। তিনি বিস্তারিত শুনে দীর্ঘদিনের এ বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। শনিবার দুপুরের দিকে কবির বিন আনোয়ার আমাদের বাড়িতে যান। এরপর উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। সেইসঙ্গে দুই ভাইয়ের মধ্যে যেন সুসম্পর্ক বজায় থাকে সেজন্য আমাকে দিয়ে মেজ ভাইয়ের কাছে মাফ চাওয়ান। কিন্তু ভাই বিরোধটি যেন সমাধান না হয় সেজন্য উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে কবির বিন আনোয়ার অসন্তুষ্ট হয়ে চলে যান।’

এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘উভয়ই আমার আত্মীয়। তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ। দুই ভাইয়ের মধ্যে কয়েকটি মামলা-মোকদ্দমাও চলছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগীর পক্ষে স্থানীয় শিক্ষকরা মানববন্ধনও করেছিলেন। এজন্য আমি ভাবছিলাম বসে মীমাংসা করি। পরে রেজাউল হকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিজে দাওয়াত নিয়ে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিষ্পত্তি চাইলেও রেজাউল চায় না। পরে আমি তাদের অনুরোধ করে এসেছি নিজেদের মধ্যে ঝামেলা না করার জন্য।’