ক্রিকেটে যত ধরনের ‘আউট’

ক্রিকেটে যত ধরনের ‘আউট’

সংগৃহীত

ক্রীড়াজগতের প্রতিটি ইভেন্টেই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। তবে ক্রিকেটে অনেক নিয়ম আছে, যা অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর অজানা। এর মধ্যে সম্প্রতি আলোচিত ‘টাইমড আউট’। এমন আউট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম দেখা গেছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচে।

নির্ধারিত সময়ে বোলারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত ছিলেন না লঙ্কান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। দুই দফায় হেলমেট পাল্টাতে গিয়ে তিন মিনিটেরও বেশি সময় বিলম্ব করে ‘টাইমড আউট’ হন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।

সোমবার (৬ নভেম্বর) দিল্লিতে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ২৫তম ওভারের কথা। সাদিরা সামারাবিক্রমা আউট হয়ে গেলে ক্রিজে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। কিন্তু হেলমেটের ফিতা ঠিক না থাকায় ব্যাটিংয়ে নামতে দেরি করছিলেন তিনি। পরে অন্য একটি হেলমেট নিয়ে আসলেও সেটিও তার কাছে খেলায় ব্যবহারে উপযোগী মনে না হওয়ায় সময়ক্ষেপণ করছিলেন। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আউটের আবেদন জানান। আর এতে নিয়ম অনুযায়ী আউট দেন আম্পায়াররা।

বর্তমানে ১১ ধরনের মারপ্যাঁচে ব্যাটারকে আউট হতে পারেন। আউট হওয়ার সেসব ধরন জেনে নেওয়া যাক...

রিটায়ার্ড : কোনো কারণে যদি ব্যাটসম্যান ক্রিজে সমস্যায় পড়ে এবং ব্যাটিং করা অসম্ভব হয়ে পড়ে তখন সেই ব্যাটসম্যানকে রিটায়ার্ড হার্ট। যদি কেউ নিজের ইচ্ছাতে ফিরে আসে, তবে তাকে রিটায়ার্ড আউট বলে। এ ছাড়া ওই ইনিংস পুনরায় শুরু করতে চাইলে প্রতিপক্ষ অধিনায়কের সম্মতি না থাকলে ওই ব্যাটসম্যানকে রিটায়ার্ড আউট বলে গণ্য করা হয়।

বোল্ড : বোলার বল করার পর সেটি যদি ব্যাটসম্যানকে ফাঁকি দিয়ে সরাসরি স্ট্যাম্পে আঘাত হানে তবে সেটি বোল্ড আউট। যদি বল স্ট্যাম্পে আঘাত করে কিন্তু বেল না পড়ে তাহলে ব্যাটসম্যান আউট হবে না।

স্ট্যাম্পিং : ব্যাটসম্যান বলে হিট করার আগেই যদি ক্রিজ থেকে বাইরে বেরিয়ে যান অথবা শরীরের কোনো অংশ যদি লাইন স্পর্শ না করে থাকে তাহলে উইকেটরক্ষক বলটিকে ধরে বেল উড়িয়ে দিতে পারেন।

টাইমড আউট : একজন ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার নির্ধারিত সময়ের যদি পরবর্তী ব্যাটসম্যান ক্রিজে না নামে, তবে সেই ব্যাটসম্যান টাইমড আউট বলে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে টেস্টে ১৮০ সেকেন্ড, ওয়ানডেতে ১২০ সেকেন্ড এবং টি-টোয়েন্টিতে ৯০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে ব্যাটসম্যানকে বাউন্ডারি লাইনের ভিতরে প্রবেশ করতে হয়।

লেগ বিফোর উইকেট (এলবিডব্লিউ) : বলার বল করার পর যদি ব্যাটসম্যান পা দিয়ে বলকে থামায় এবং সেটি যদি স্ট্যাম্প বরাবর হয় তবে সেটি এলবিডব্লিউ।

কট আউট : ব্যাটসম্যান বলকে হিট করার পর যদি শূন্যে থাকা অবস্থায় কোনো ফিল্ডার সেটি তালুবন্দি করে তবে সেটি ক্যাচ আউট। এটিও তিন ধরনের হয়ে থাকে। ১) কট বাই দ্যা ফিল্ডার, ২) কট অ্যান্ড বোল্ড ও ৩) কট বিহাইন্ড।

হ্যান্ডেল্ড দ্য বল : বোলার বল করার পর ব্যাটসম্যান যদি সেই বল ব্যাটের বদলে হাত দিয়ে ধরে তবে সেটি ‘হ্যান্ডেল্ড দ্য বল’ আউট।

হিট দ্য বল টোয়াইচ : প্রথম বার ব্যাট চালানোর পর যদি ব্যাটে না লাগার পর দ্বিতীয়বার ব্যাট চালায় এবং ব্যাটে বল লাগায় তবে সেটিও আউট।

হিট উইকেট : কোনো ব্যাটসম্যান যদি শট নেওয়ার সময় বা প্রথম রান শুরু করার সময় তার শরীর বা ব্যাট দিয়ে নিজস্ব স্ট্যাম্পের বেল ফেলে দেয়, তাহলে সে আউট হয়ে যায়। এই আইন প্রযোজ্য হবে না যদি তিনি কোনো ফিল্ডারের দ্বারা উইকেটে ছুড়ে দেওয়া বল এড়িয়ে যান বা রান আউট এড়াতে উইকেট ভেঙে দেন।

অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড : রান নেওয়ার সময় ফিল্ডার থ্রো করা বল যদি ব্যাটসম্যান ইচ্ছাকৃতভাবে আটকায় তবে সেটি আউট বলে ঘোষণা করা হয়।

রানআউট : ব্যাটসম্যান যখন রান নেওয়ার সময় একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দৌড়ান এবং তার ক্রিজে পৌঁছানোর আগেই যদি কোনো ফিল্ডার দ্বারা সরাসরি অথবা তালুবন্দি করে উইকেটের বেল ফেলে দেন, তাহলে তিনি রান আউট হবেন।