আজ খুলনায় যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আজ খুলনায় যাচ্ছে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবিঃ সংগৃহীত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ছয় বছর পর খুলনায় আসছেন। সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি। এছাড়া ২১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এ উপলক্ষে খুলনা বিভাগজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ চলছে।

 

খুলনার জনসভার ঢেউ যশোরেও লেগেছে। যশোর থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী খুলনার জনসভায় যোগ দেবেন। এমনই প্রস্তুতি নিয়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। যশোর থেকে নেতাকর্মী ও জনসাধারণকে নিয়ে ১১টি বিশেষ ট্রেন, ৬০০টি বাস, কয়েকশ মাইক্রোবাস খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার।

দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে খুলনা নগরী। নৌকার আদলেই খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে তৈরি করা হয়েছে জনসভা মঞ্চ। এ মঞ্চেই প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।

 

নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ অঞ্চল সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরকে কেন্দ্র করে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জেলা যশোর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

নেতাকর্মীরা বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানে খুলনা থেকে যশোরের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ। ফলে প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভায় যশোর থেকে নেতাকর্মীদের সমাগম বেশি করার নির্দেশনাও আছে কেন্দ্রীয় নেতাদের। ফলে চলতি মাসের প্রথম থেকেই সরব যশোর শহর, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। চালানো হয়েছে প্রচার-প্রচারণাও। বৃহৎ এ জেলা থেকে লক্ষাধিক মানুষ যাবেন প্রধানমন্ত্রীর জনসভায়।

 

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, শহর থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা খুবই উচ্ছ্বসিত। যশোরের ৮ উপজেলা থেকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় লক্ষাধিক কর্মী ও সমর্থক অংশ নেবেন।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে এবং দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে বিশেষ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেবেন। এরই মধ্যে জেলা, উপজেলা, পৌর এলাকা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সব নেতাকে নিয়ে বিভিন্নসময় কর্মীসভা করা হয়েছে।

 

জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগীয় জনসভায় যশোর থেকে নেতাকর্মীরা যেতে বাস, মাইক্রো, বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। আট উপজেলার জন্য যশোরের অভয়নগর থেকে চারটি, বেনাপোল থেকে দুটি, ঝিকরগাছায় একটি, যশোর রেলস্টেশন থেকে চারটি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার ৯৩টি ইউনিয়নের জন্য ৬০০ বাস রাখা হয়েছে। এছাড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে নেতাকর্মীদের আনতে নছিমন থ্রি হুইলার, ইজিবাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকশ মাইক্রোবাস রাখা হয়েছে। সোমবার সকাল ৮ থেকে নির্দিষ্ট স্থান থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে যাবেন। এছাড়া যশোর থেকে খুলনায় যাওয়া নেতাকর্মীদের সকাল ও দুপুরের খাবারের আয়োজনও করা হয়েছে।

যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু বলেন, এ সরকারের আমলে খুলনা বিভাগে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় যশোরে চেহারার পরিবর্তন করেছে শেখ হাসিনার সরকার। তাই সেই উন্নয়নের নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে এবং আগামী নির্বাচনের দিক-নির্দেশনা জানতে যশোরের নেতাকর্মীরা খুবই উচ্ছ্বসিত। এরই মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের নির্দেশনায় সব ইউনিয়ন ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। নেতাকর্মীরা যশোরের বিভিন্ন উন্নয়নের বিলবোর্ড ও দলীয় প্রধানদের ছবি সম্বলিত প্ল্যা-কার্ড নিয়ে খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাবেন।

 

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম নিয়ামত উল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ জনসভা সফল করতে যশোরের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে জনসভায় যাবেন আমাদের নেতাকর্মীরা।

যশোর রেলস্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে নেতাকর্মীরা যেতে যশোর জেলার অভয়নগর, সদর, ঝিকরগাছা ও বেনাপোল স্টেশন থেকে আটটি এবং কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা থেকে তিনটি ট্রেন ভাড়া নিয়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। নির্দিষ্ট যাত্রী নিয়ে এসব ট্রেন আপ ডাউন করবে।

 

তিনি আরও বলেন, যশোর খুলনা রুটের নিয়মিত ছয়টি ট্রেন এবং সোমবারে চিত্রা ও সুন্দরবন নামে দুটি ট্রেন বন্ধ থাকায় বিশেষ ব্যবস্থায় আটটি ট্রেন যশোর থেকে খুলনায় যাবে। এছাড়া বিভিন্ন ট্রেনের বিভিন্ন বগি নিয়ে তিনটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে যশোর এক্সপ্রেস। ফলে অন্য জেলায় যাতায়াতকারী বা এ রুটে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।

 

এদিকে জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, যশোরের বিভিন্ন রুট থেকে যোগাযোগ করে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ ৬০০ বাস ভাড়া করেছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সমাবেশে যাত্রী পরিবহনের জন্য যাবে। কোন গাড়ি কোন জায়গা থেকে ছাড়বে তার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি যেন না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

 

 

২০১৮ সালের ৩ মার্চের পর খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।