নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় কিনা জানা যাবে আজ

নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় কিনা জানা যাবে আজ

ছবি: সংগৃহীত

সমুদ্রের জলরাশির উপরিভাগের উষ্ণতা বাড়ায় বঙ্গোপসাগরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। এবার বছরের সর্বশেষ এবং চতুর্থ ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়টি তৈরির আভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ তৈরি হয়েছে।

এটি আজ বৃহস্পতিবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। সেখান থেকে ঘূর্ণিঝড়ও হতে পারে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কিনা– তা স্পষ্ট হওয়া যাবে আজ। এটি বাংলাদেশের দিকে আসবে কিনা, তা-ও নিশ্চিত করতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মিগজাউম’। এটি মিয়ানমারের দেওয়া নাম। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এটি ঘূর্ণিঝড়েও পরিণত হতে পারে। মনে করা হচ্ছে, এটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে যাবে। আবার বাংলাদেশের দিকে আসার আশঙ্কাও আছে কিছুটা। বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আবহাওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থান করছে।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, লঘুচাপটি নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে ২ ডিসেম্বর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোস্তফা কামাল বলেন, আন্দামান ও নিকবর দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে যে লঘুচাপ তৈরি হয়েছে তা প্রায় একই স্থানে অবস্থান করছে। এটি যে স্থানে আছে সেখানে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য খুবই অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। ওই স্থানে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ২৯ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লঘুচাপটি আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। এরপর দিক পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব দিকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে, ৫ থেকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্য এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। 

চলতি বছর এ পর্যন্ত তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে বাংলাদেশে। গত ১৪ মে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। গত ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে ‘হামুন’। এরপর ১৭ নভেম্বর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’।