চট্টগ্রাম-২ আসনে নৌকার প্রতিপক্ষ একতারা, তরমুজ, ফুলের মালা

চট্টগ্রাম-২ আসনে নৌকার প্রতিপক্ষ একতারা, তরমুজ, ফুলের মালা

ফাইল ছবি।

নানা নাটকীয়তার জন্ম দেওয়া চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের খাদিজাতুল আনোয়ার নির্বাচনের মাঠে টিকে আছেন। তার কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে নির্বাচনি মাঠে আওয়াজ তুলেছেন- একতারা প্রতীকের সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ, ফুলের মালা প্রতীকের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ও তরমুজ প্রতীকের হোসাইন মো. আবু তৈয়ব। এই চার প্রার্থীর উত্তাল প্রচার প্রচারণায় এই আসনে চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে।

জানা গেছে, খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিলেও নির্বাচনি হিসেব নিকেশে শেষ পর্যন্ত সদ্য নিবন্ধিত সুপ্রিম পার্টির সাইফুদ্দিনকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে আলোচনা ছিল। কয়েকদিন আগে সাইফুদ্দিন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাথে দেখার করার পর বিষয়টির ঢালপালা আরো মেলতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত খাদিজাতুলের দলীয় মনোনয়ন টিকে যাওয়ায় জমে গেছে নির্বাচন।

দলের আশীর্বাদ পেলেও খাদিজাতুলের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন সরকারঘেঁষা দুই ইসলামি ঘরানার দল তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর, সুপ্রিম পার্টির সাইফুদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তৈয়ব। এদের মধ্যে সাইফুদ্দিন ও নজিবুল সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। মাইজভান্ডারী দর্শনের প্রবর্তকদের বংশধর হওয়ার কারণে তাদের দুজনের নিজস্ব ভোট ব্যাংক ও অনুসারী আছে।

আবার উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া তরমুজ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তৈয়বেরও বেশ প্রভাব আছে এই উপজেলায়। কেউ কাউকে শেষ পর্যন্ত ছাড় না দেওয়ার কারণে এই আসনের নির্বাচন হয়ে উঠেছে চরম প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। সেই সাথে এই আসনের নির্বাচন সংঘাতপূর্ণ হবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার বলেন, ‘সারাদেশের মতো ফটিকছড়ির উন্নয়নে আওয়ামী লীগের যে অবদান তাতে শেষ পর্যন্ত নৌকার উপরই ভোটাররা ভরসা রাখবেন। আমি ও আমার পরিবার সবসময় ফটিকছড়িবাসীর উন্নয়নে সচেষ্ট ছিলাম। আগামীতেও এই ধারা অব্যহত থাকবে।’

নজিবুল বশর বলেন, ‘আমি সবসময় ফটিকছড়িবাসীর সুখ দুঃখে ছিলাম। সবসময় মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। ভোটাররা অতীতের মতো ফুলের মালা প্রতীককেই বেছে নিবেন।’

সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ফটিকছড়িতে বলার মতো উন্নয়ন হয়নি। এখানে পরিবর্তন দরকার। এটা এখন জনদাবি। মানুষের দাবি ও আশা আকঙ্খার প্রতিফলন থেকে আমি প্রার্থী হয়েছি। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

তরমুজ প্রতীকের প্রার্থী আবু তৈয়ব বলেন, ‘আমি তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। প্রচার প্রচারণা দেখেই মানুষ বুঝতে পারছে ভোট কোন দিকে যাবে।’

ফটিকছড়ি উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে আসনটি গঠিত হয়েছে। এখানকার মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৯ হাজার ২২৭ জন। এই চার প্রার্থীর ছাড়াও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মীর মুহামমদ ফেরদৌস আলম, ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ হামিদ উল্লহ্, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।