রুপচর্চায় শামুকের জনপ্রিয়তা বাড়ছে

রুপচর্চায় শামুকের জনপ্রিয়তা বাড়ছে

ছবিঃ সংগৃহীত।

প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে শামুক। আর বর্তমানে শামুকের ব্যবহার পেয়েছে এক ভিন্ন মাত্রা।ত্বক ও চোখের যত্নে শামুকের শ্লেষ্মা বা মিউকাস কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রসাধনী পণ্য। শামুকের শ্লেষ্মাযুক্ত প্রসাধনী পণ্যে ত্বকের ক্ষতি মেরামতে ভূমিকা রাখায় ব্যবহার বাড়ছে বিশ্বজুড়েই।

হাতের ত্বক নরম রাখার পাশাপাশি ক্ষতের চিকিৎসায় ব্যবহার করত ১৯৮০-এর দশকে চিলির শামুকচাষিরা ।দক্ষিণ আমেরিকায় শামুকের জনপ্রিয়তা শুরু হয় তখন থেকেই ।এক গবেষণায় দেখা গেছে, শামুক থেকে নির্গত জেলকে বলে স্নেইল এক্সট্রাক্ট বা মিউসিন। অ্যাকটিভ ইনগ্রিডিয়েন্টেস সমৃদ্ধ একটি উপাদান হচ্ছে এই স্নেইল এক্সট্রাক্ট বা মিউসিন।

স্নেইল মিউসিনে আছে গ্লাইকোপ্রোটিন, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এবং গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মতো আরও অনেক উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। আর সব সব ধরনের ত্বকেই শামুকের মিউসিন ব্যবহার করা যায়। এমনকি সেন্সেটিভ ত্বকেও কোনো সমস্যা ছাড়াই এই উপাদানটি ব্যবহার করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ জোশুয়া জেইচনার বলেন, বাগানের শামুকের বৈজ্ঞানিক নাম করনু অ্যাসপারসাম। বাগানের শামুক থেকে ত্বকের যত্নের বিভিন্ন প্রসাধনী পণ্য তৈরির সুযোগ বাড়ছে। শামুকের এ প্রজাতি থেকে ময়েশ্চারাইজিং, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পূর্ণ ও নতুন কোলাজেনকে উদ্দীপিত করতে সক্ষম স্লাইম তৈরি হচ্ছে।এ উপাদান বার্ধক্যের গতি কমাতে পারে। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এলিজাবেথ বাহার হাউশমান্ড বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক মেরামতের পাশাপাশি আর্দ্র রাখতে শামুকের শ্লেষ্মাযুক্ত পণ্যের চাহিদা বেশি।

শামুকের শ্লেষ্মা প্রাকৃতিক ভিটামিন এ, ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পূর্ণ, যা প্রদাহ কমায় ও বার্ধক্যজনিত লক্ষণ কমাতে পারে। ত্বকের কোলাজেন উত্পাদনকে বাড়ানোর উপাদানও রয়েছে শামুকের শ্লেষ্মায়।যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট আন্তোনিও সেরুলো তিন ধরনের শামুকের শ্লেষ্মা বিশ্লেষণ করেছেন। শামুকের পিঠের পাশাপাশি পা থেকেও আঠালো ও লুব্রিকেটিং শ্লেষ্মা সংগ্রহ করেন তিনি। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের শ্লেষ্মাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জৈব রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গেছে।

তৈলাক্তকরণের জন্য প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত শ্লেষ্মায় বেশি কোলাজেন থাকে। অন্য শ্লেষ্মাগুলোতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোটিন। নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির জৈব রসায়নবিদ অ্যাডাম ব্রাউনশওয়েগ বলেন, মানুষের শরীরের অভ্যন্তরীণ আলসার ও সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ক্ষত মেরামতে আঠা হিসেবে শামুকের শ্লেষ্মা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

এরই মধ্যে শামুকের শ্লেষ্মার নির্যাসে তৈরি ড্রপ শুষ্ক চোখের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এখনো শামুকের শ্লেষ্মায় থাকা সব উপাদানের সন্ধান পাননি।