লোহিত সাগরে নৌ-অভিযান শুরু করছে ইইউ

লোহিত সাগরে নৌ-অভিযান শুরু করছে ইইউ

লোহিত সাগরে নৌ-অভিযান শুরু করছে ইইউ

লোহিত সাগরে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হাউছি যোদ্ধাদের হামলা থেকে বাণিজ্যিক জাহাজগুলো রক্ষা করতে অভিযানের ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে ইয়েমেনের ভূখণ্ডে হামলা চালাবে না তারা। আপাতত চারটি দেশ জাহাজ পাঠাচ্ছে।

ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে দুশ্চিন্তা ও ট্রাম্প শিবিরের চাপে নিজস্ব নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বের অন্য প্রান্তে অশান্তির মুখে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারছে না। বিশেষ করে নিজস্ব অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়লে তো নয়ই। হাউছিদের দৌরাত্মের কারণে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় বিশ্ব বাণিজ্যের ওপর কুপ্রভাব পড়ছে। অনেক কোম্পানি বাধ্য হয়ে বিকল্প ও অনেক দীর্ঘ পথে জাহাজ চালাচ্ছে।

ইইউ অর্থনীতিবিষয়ক কমিশনর পাওলো জেন্কিলোনি বলেন, এর ফলে ১০ থেকে ১৫ দিনের এই বিলম্বের ফলে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে পণ্য পাঠানোর ব্যয় প্রায় ৪০০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ কিছু দেশ যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে ও ইরান-সমর্থিত হাউছিদের ওপর পাল্টা হামলা চালিয়ে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে। এবার ইইউ সঙ্ঘবদ্ধভাবে সেখানে সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।

সোমবার ইইউ আনুষ্ঠানিকভাবে লোহিত সাগরে নৌবাহিনীর মিশনের ঘোষণা করল। গ্রিক ভাষায় ‘আসপিদেস বা ঢাল নামের সেই অভিযানের আওতায় চারটি জাহাজ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লোহিত সাগরে পৌঁছে যাবে। এখন পর্যন্ত ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও বেলজিয়াম জাহাজ পাঠিয়ে সেই মিশনে অবদান রাখতে চায়। তবে এক বছর মেয়াদের সেই অভিযানে শুধু লোহিত সাগরে বেসরকারি জাহাজের সুরক্ষার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। ইয়েমেনের ভূখণ্ডে কোনো হামলা চালাবে না ইইউ। শুধু হামলা ঘটলে পাল্টা জবাব দিতে পারবে যুদ্ধজাহাজগুলো।লোহিত সাগর থেকে এডেন উপসাগর পর্যন্ত এলাকায় সেই অভিযান চলবে। জাহাজের পাশাপাশি আকাশ থেকে সতর্ক করার ব্যবস্থাও মোতায়েন করা হবে।

ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, সেখানে অবাধে জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে ইইউ আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সাথে কাজ করবে।ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, সাধারণ ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা ক্ষমতা গড়ে তোলার পথে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

সোমবার সন্ধ্যায় হাউছি যোদ্ধারা জানিয়েছে, তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে নথিভুক্ত জাহাজগুলোর ওপর নির্দিষ্টভাবে হামলা চালানো হয়েছে।এর আগে অ্যামব্রে নামের এক সামুদ্রিক নিরাপত্তা কোম্পানি জানিয়েছিল, গ্রিসের পতাকাধারী মার্কিন মালিকানার একটি জাহাজের ওপর দুই ঘণ্টায় দুটি হামলা চালানো হয়েছে।

গাজার ওপর ইসরাইলি হামলার কারণে হাউছিরা লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। কাতারের জ্বালানি মন্ত্রী সাদ আল-কাবি সোমবার গাজায় অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানান। তিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘সমস্যার শিকড়’ হিসেবে বর্ণনা করে অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক প্রভাব বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসি জানান, লোহিত সাগরে উত্তেজনার কারণে সুয়েজ ক্যানেলের রাজস্ব চলতি বছরে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে