সৎমায়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার এক শিশু

সৎমায়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার এক শিশু

ছবিঃ সংগৃহীত।

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার আইসার গ্রামে সৎমায়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিথি আক্তার নামের এক শিশু। দুই গালে ও হাতে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানির ভয়ে শিশুটিকে চিকিৎসার কথা বলে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন অভিযুক্ত সেনোয়ারা বেগম।

ঘটনার দুদিন পর বিষয়টি জানতে পেরে নির্যাতিত বিথির অন্য ভাইবোনরা বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পেয়ারপুর থেকে তাকে উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।নির্যাতনের শিকার বিথি আক্তার ডাসার উপজেলার ডাসার ইউনিয়নের আইসার গ্রামের দেলোয়ার মোল্লার মেয়ে। সে একই উপজেলার দর্শনা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আইসার গ্রামের মোল্লা বাড়ির দেলোয়ার মোল্লার প্রথম স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৩ বছর আগে মারা যান। প্রথম স্ত্রীর সংসারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে ছিল। পরে দেলোয়ার মোল্লা বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ধানডোবা গ্রামের সেনোয়ারা বেগমকে বিয়ে করেন। দেলোয়ার মোল্লার প্রথম স্ত্রীর রেখে যাওয়া সন্তানের মধ্যে সবার ছোট বিথি। তবে শুরু থেকেই বিথিকে সৎমা মেনে নিতে পারেননি। প্রায়ই তাকে নির্যাতন করতেন। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে গরম খুন্তি দিয়ে বিথির হাতে ও মুখে ছ্যাঁকা দেন সেনোয়ারা বেগম।

বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ও জানাজানির ভয়ে বিথিকে তার সৎমা ও বাবা মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যান। ঘটনার দুদিন পর বুধবার সকালে বিষয়টি বিথির অন্য ভাইবোনরা জানতে পারেন। তারা সকালে পেয়ারপুর থেকে বিথিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর থেকে বিথির সৎমা ও বাবা পলাতক।

নির্যাতনের শিকার বিথির মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বোন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৩ বছর আগে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে মারা যান। সবার ছোট বিথি। তাকে ওর সৎমা গরম খুন্তি দিয়ে শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। পরে বিথিকে নিয়ে মাদারীপুরের পেয়ারপুরে আত্মগোপনে চলে যান। আমরা ঘটনার দুদিন পর বিষয়টি জানতে পারি। বিথির বড় ভাই খবর পেয়ে বুধবার সকালে বিথিকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে গেছে।’

পলাতক থাকায় অভিযুক্ত সেনোয়ারা বেগমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শফিকুল বলেন, পরিবারের কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ নিয়ে আসেননি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।