২ মাস পরে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা উঠেছে

২ মাস পরে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা উঠেছে

ছবিঃ সংগৃহীত।

দুই মাস পর সুন্দরবনের নদ-নদী ও জলাভূমিতে বেড়ে ওঠা সবধরনের কাঁকড়া আহরণের নিষেধাজ্ঞা উঠেছে। শনিবার (২ মার্চ) পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রজনন মৌসুম হওয়ায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুরো সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ১ মার্চ থেকে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে জেলেরা কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন।

কাঁকড়া ব্যবসায়ী মো. আলম খান জানান, জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলাসহ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েক কোটি টাকার কাঁকড়া রপ্তানির করা হয়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি কাঁকড়া রপ্তানি শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। ফলে এর সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়ে।

শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের জেলে নিমাই চন্দ্র বালা জানান, আমার প্রধান পেশা সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণ করা। বছরে এ দুই মাস পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করি। দুই মাসের জন্য অন্য পেশায়ও যুক্ত হতে পারি না।

বছরে দুই মাস বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়ে মংলার জয়মনি এলাকার জেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার বিভিন্ন পেশার কর্মজীবীদের প্রণোদনা দেয়। কিন্তু আমাদের জন্য কিছু নাই।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল জানান, নদী বা খালে কাঁকড়া বেড়ে উঠলেও এর প্রজনন হয় সাগর মুখে বা গভীর সাগরে। তাই এ সময় কাঁকড়া গভীর সাগরের দিকে ছোটে। তাছাড়া এ সময় নদীর পানি থেকে সাগরের পানি গরম ও লবণাক্তটা বেশি থাকে।তিনি আরও জানান, ডিম দেওয়ার সময় মা কাঁকড়ার ধরা খুব সহজ। এসময় তারা ক্ষুধার্ত থাকে। তাদের সামনে যে খাবার দেওয়া হয় সেটি দ্রুত খাওয়ার জন্য এগিয়ে আসে। এর ফলে প্রজনন মৌসুমে খুব সহজেই জেলেরা কাঁকড়া শিকার করতে পারে।

পূর্ব-সুন্দরবনে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজি মো. নূরুল করিম বলেন, দুই মাস কাঁকড়ার প্রজননের মৌসুম হওয়ায় এ সময় কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। আর এ নিষিদ্ধ বলবৎ থাকে শুধু সুন্দরবন এলাকায়। তাই সুন্দরবন বিভাগ এটা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।