নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিআইসিএম এ সেমিনার অনুষ্ঠিত

নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিআইসিএম এ সেমিনার অনুষ্ঠিত

সংগৃহীত

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) এ নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে একটি সেমিনার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ ইন্সটিটিউটের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে “আর্থিক ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণে বাধা উন্মোচন (Empowering women in finance: unbelieve the barriers to participation in the Bangladesh capital market)” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইসিএম এর সহকারী অধ্যাপক জনাব কাশফীয়া শারমিন।

ইন্সটিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ তারেক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এর সভাপতি জনাব মাজেদা খাতুন ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ ছায়েদুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের নারীরা আর্থসামাজিকভাবে কম সম্পদের অধিকারী হওয়ার কারণে তাদের বিনিয়োগ চিন্তা তুলনামূলক কম। তবে বর্তমানে বর্ধনশীল অর্থনীতিতে নারীদের অবদান অনেক ক্ষেত্রেই বেড়ে গেছে। অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়লে দেশের পুঁজিবাজারেও তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে  বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক গৃহীত  বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। আমরা বিভাগীয়  শহরের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অংশগ্রহণ করছেন। এতে পুঁজিবাজারের উপর নারীদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার এর উপর বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। আপনারা সেখান থেকেও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা ছাড়া কোন সেবাই মানুষের  পৌঁছানো যাবে না। ইতিমধ্যে অনলাইনে বিও একাউন্ট খোলা যাচ্ছে। নারীরা সহজেই ঘরে বসে এর মাধ্যমে বিও হিসাব খুলতে পারছেন এবং ঘরে বসেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারছেন।  পাঠ্যপুস্তকে ও বিনিয়োগ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের পুঁজিবাজারে পুরুষ ও নারীদের জন্য সমান সুযোগ রয়েছে এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়েও নারীদের সুযোগ বেশি রয়েছে। এসব সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে নারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জনাব মাজেদা খাতুন বলেন, পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার যেন নারীবান্ধব হয় সে ব্যাপারে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। একই সাথে পুঁজিবাজারে নারীদের জন্য বিশেষ প্রোডাক্ট নিয়ে আসার জন্যও পরামর্শ দেন তিনি। 

জনাব মোঃ ছায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারনে অনেক নারী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আসতে চান না। তাদেরকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে হলে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া দরকার।

তিনি বলেন নারীদের পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে হলে তাদের দোরগোড়ায় কিভাবে সেবা পৌঁছে দেওয়া যায়, কিভাবে ঝুঁকি কমানো যায় তা প্রাধান্য দেয়া দরকার। তাহলে নারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি

বিআইসিএম এর নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ তারেক বলেন, বিআইসিএম পুঁজিবাজারের উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ডিপ্লোমা ও মাস্টার্স প্রোগ্রাম পরিচালনা করে আসছে। এসব প্রশিক্ষণ, ডিপ্লোমা ও মাস্টার্স প্রোগ্রামসমূহে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলক কম। সুতরাং নারী বিনিয়োগকারীরা বিআইসিম থেকে পুঁজিবাজারের উপর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং পুঁজিবাজার বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।