ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রেনের বগি পরিবর্তনে যাত্রীদের ক্ষোভ

ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রেনের বগি পরিবর্তনে যাত্রীদের ক্ষোভ

প্রতিকী ছবি

আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি পরিবর্তন করে পুরনো ও জরাজীর্ণ বগি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীদের দাবি, দেশের সর্বোচ্চ দূরত্বের রেলপথে বিরতিহীন এই ট্রেনের ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বগি পরিবর্তন করে পুরনো বগি দেওয়া হয়েছে। বগিগুলো লক্কর-ঝক্কর। এর সিটগুলো এতটাই সংকীর্ণ যে বসতে গেলে সিটের সঙ্গে হাঁটু আটকে যায়।

পুরনো বগি দিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে ৬৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের তালিকায় ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার নাম রয়েছে। নিরাপদ ভ্রমণে এই দুটি জেলার মানুষের প্রথম পছন্দ ট্রেন। গত দুই দশকে ঢাকায় যাতায়াতে বেড়েছে ট্রেনের চাহিদা।

এর মধ্যে পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নতুন সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ পান তিনি। তার প্রচেষ্টায় পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা রেল রুটে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়। ২০১৯ সালের ২৫ মে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা রেলপথে যাত্রা শুরু করে।

সেই থেকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ট্রেনটি মোট ১২টি বগি নিয়ে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা পথে সরাসরি চলছিল পঞ্চগড় এক্সপ্রেস। সেই আধুনিক বগি পরিবর্তন করে গত বছরের শেষ দিকে অনেক পুরনো নড়বড়ে বগি সংযুক্ত করা হয় ট্রেনটিতে। এতে যাত্রীদের অনেকেই পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের ওই বগি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. আক্তারুলের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

তবে স্টেশন মাস্টার জানান, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী এসব বগি পরিবর্তন হয়েছে।আগে যে রেলের বগিগুলো ছিল সেগুলো নতুন। কিন্তু বর্তমানে বর্তমানে যে বগিগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো পুরনো। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর এই বগিগুলো পরিবর্তন করা হয়। বগিগুলোর সিট যদিও ছোট কিন্তু সিট সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের যাত্রীদের জন্য এই ট্রেনে আগে সিট বরাদ্দ ছিল ২৪৬টি। বর্তমানে তা ৩৬৬টি করা হয়েছে।

এদিকে, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি পরিবর্তন নিয়ে উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের মধ্যে সমালোচনা চলছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।এ বিষয়ে কালাম নামে ঠাকুরগাঁওয়ের এক যাত্রী বলেন, আমি রেলে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করি। আগের যে সিটগুলো ছিল সেগুলো অনেক ভালো ছিল। বর্তমান যে সিটগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো খুব খারাপ। চাপা চাপা, পুরনো। বর্তমানে যে বগিগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মান অনেক খারাপ। আমাদের এখান থেকে ঢাকার দূরত্ব অনেক বেশি। কিন্তু আমাদের নতুন বগি অন্য জায়গায় নিয়ে আমাদের পুরাতন বগি দেওয়া হয়েছে।

আবদুল করিম নামে একজন বলেন, আমি আমার মেয়েকে ট্রেনে উঠিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। আমাদের আগের ট্রেনের বগিগুলো ছিল নতুন আর ভালো। আর বর্তমানে যে বগিগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো অনেক বেশি পুরনো। আমরা চাই আমাদের আগের বগিগুলো দেওয়া হোক।