এত অল্প সময়ে জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করার ঘটনা নজিরবিহীন

এত অল্প সময়ে জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করার ঘটনা নজিরবিহীন

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা (জিম্মি থেকে উদ্ধার) ফায়সালা করা নজিরবিহীন। নববর্ষের প্রথম দিনে এই উদ্ধার হয়েছে, তাই আমরা আনন্দিত। শুধু তাদের আত্মীয়-স্বজন নয়, পুরো দেশবাসী খুবই আনন্দিত যে, আমরা আমাদের নাবিকদের মুক্ত করতে পেরেছি।

রবিবার ঢাকায় মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মেরিটাইম সেক্টরে যারা যারা আছে সবাই যোগাযোগ রেখেছে তা ফায়সালা করার জন্য। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক মেরিটাইম উইং তৎপর ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা নাবিকদের মুক্ত করতে তৎপর ছিলাম।

তিনি বলেন, নাবিকদের মুক্তির সংবাদটি যখন প্রধানমন্ত্রীকে দেই, তিনি শুকরিয়া আদায় করেছেন। ২৩ জন নাবিক জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছেন, এখন তারা নিরাপদ। দীর্ঘ ১ মাসের বেশি সময় ধরে তৎপরতার মধ্য দিয়ে জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করতে পেরেছি। এখন তারা ইউএইর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা (জিম্মি থেকে উদ্ধার) ফায়সালা করা নজিরবিহীন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রথম থেকেই শুনছি-মুক্তিপণের কথা। এটার সঙ্গে আমাদের ইনভলভমেন্ট নেই। এ ধরনের তথ্য আমাদের কাছে নেই। অনেকে ছবি দেখাচ্ছেন, এ ছবিগুলোরও কোনো সত্যতা নেই। ছবি কোথা থেকে কিভাবে আসছে আমরা জানি না। এটা যতটুকু হয়েছে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিপিং ডিপার্টমেন্ট, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম উইং, ইউরোপিয়ান নেভাল ফোর্স, ভারতীয় নৌবাহিনী, সোমালিয়ার পুলিশকে ধন্যবাদ দিতে চাই। সবাই সহযোগিতা করেছে।

দীর্ঘসময়ে আলাপ আলোচনার তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি। দীর্ঘ সময় ধরে। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। আমাদের আলাপ-আলোচনা, এখানে বিভিন্ন ধরনের চাপ রয়েছে, সেই চাপগুলো কাজে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। জলদস্যুরা শক্তিমান তা তো নয়। এতদিন যে সময়টা নিয়েছি আমরা, ইউরোপিয়া নেভাল ফোর্সসহ তারা ভীষণ চাপে ছিল। বিশেষ করে সোমালিয়ান পুলিশ চাপে ছিল। তারা চায় জলদস্যুদের হাত থেকে সমুদ্র পথটাকে নিরাপদ করতে। এজন্যে আমেরিকান সাপোর্টও নিচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে এ রুটটা যেন নিরাপদ থাকে। সারা বিশ্বে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কারণে তাদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে এটা তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারা খুবই সজাগ ছিল। জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় ছিল। আন্তর্জাতিক চাপ ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে (নেগোসিয়েশন) হয়েছে। তাদেরও (সোমালিয়ান জলদস্যু) নিরাপত্তার ব্যাপার ছিল। জলদস্যুরাও তাদের নিরাপদ রাখতে চাইবে, এ চাপটা সার্বক্ষণিক ছিল। খুবই চরম পর্যায়ে ছিল-এজন্যে তারা নেমে গেছে। চাপটা এমন ছিল তারা জলদস্যু ছিল ২০ জন, পরে ৬৫ জন জলদস্যু জাহাজে অবস্থান নেয়। কি পরিমাণ মূল ভূখণ্ডে চাপ ছিল বুঝতে পেরে সবাই একসঙ্গে বেরিয়ে গেছে। মূল ভূখণ্ডে যাওয়ার পর তাদের কি অবস্থা হয়েছিল তা জানা নেই, সেখানে সোমালিয়ান পুলিশ ছিল।