পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন: পঞ্চম দফার ভোটেও একাধিক সংঘর্ষ

পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন: পঞ্চম দফার ভোটেও একাধিক সংঘর্ষ

পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন: পঞ্চম দফার ভোটেও একাধিক সংঘর্ষ- সংগৃহীত ছবি

পঞ্চম দফায় শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৭টা বাজতেই শুরু হয়ে গেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৪৫ আসনের ভোটগ্রহণ। এর আগে ৪ দফায় রাজ্যের ১৩৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এই দফায় ভোট কালিম্পঙের ১, দার্জিলিঙের ৫ এবং জলপাইগুড়ির ৭ বিধানসভা আসনের সবগুলিতেই। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৩টির মধ্যে ১৬, নদিয়ায় ১৭টির মধ্যে ৮ এবং পূর্ব বর্ধমানের ১৬টির মধ্যে ৮ আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬ জেলার ৪৫ আসনে ভোট পড়েছে ১৬.২৭ শতাংশ।

খবর পাওয়া গেছে বিশৃঙ্খলারও। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি বিধানসভার একটি ভোট কেন্দ্রের মধ্যেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক পোলিং এজেন্টের। ১০৭ নম্বর বুথে মৃত ওই ব্যক্তি নির্দল অভিজিৎ সামন্তের পোলিং এজেন্ট ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। শান্তিপুরে এক তৃণমূল কর্মীকে রড দিয়ে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছেছে। 

স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের দুই গ্রুপের মধ্যে শনিবার সকালে সংঘর্ষ শুরু হয় শান্তিপুরের গোস্বামী পাড়া এলাকায়। বাপন বিশ্বাস নামে ওই কর্মী গুরুতর আহত হন। কল্যাণী বিধানসভার সগুনা এলাকায় বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বেলা বাড়তে অশান্তি ছড়ায় উত্তর ২৪ পরগনার সল্টলেকেও। সেখানে তৃণমূল-বিজেপি-র মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এলাকায় উপস্থিত হয় পুলিশ বাহিনী। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

রাজ্যে প্রথম ৩ দফার ভোট বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ হলেও চতুর্থ দফা‌য় পাঁচটি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সেটাও অবশ্য শুধুমাত্র কুচবিহার জেলার শীতলখুচি আসনে। বাকি ৪৩ আসনে তেমন কোনও কোনও অভিযোগ ওঠেনি। শীতলখুচিতে বুথের লাইনে এক জনের মৃত্যু হয় দুষ্কৃতীর গুলিতে। আর বাকি ৪ জনের কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে। আর তা নিয়ে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ। তবে শনিবার আরও সতর্ক নির্বাচন কমিশন।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই দফার ভোটগ্রহণের জন্য মোট ১ হাজার ৭১ কোম্পানি আধা সেনা মোতায়েন হয়েছে। এর মধ্যে ভোটের কাজে ব্যবহার হবে ৮৫৩ কোম্পানি। বাকি বাহিনী থাকছে প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য। শুধু বারাসতেই মোতায়েন রাখা হয়েছে ৬৯ কোম্পানি আধাসেনা। এই দফায় অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র বিধাননগর আসনটি। এই কেন্দ্রে এ বার মুখোমুখি লড়াই দুই প্রাক্তন সহযোদ্ধা সুজিত বসু এবং সব্যসাচী দত্তের। জানা গেছে, হেভিওয়েট এই লড়াই শান্তিপূর্ণ রাখতে ৪৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে। শনিবার পাহাড়েও ভোটগ্রহণ রয়েছে। দার্জিলিঙে ৬৮ কোম্পানি এবং কালিম্পঙে থাকছে ২১ কোম্পানি আধাসেনা থাকছে। শিলিগুড়িতে ৫৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। উত্তরবঙ্গের আর এক জেলা জলপাইগুড়িতে ১২২ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন রাখা হয়েছে।

শুধু বিধাননগর নয়, এই দফায় নজরকাড়া কেন্দ্র অনেকগুলিই। ভাগ্য নির্ধারণ হবে রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু গৌতম দেব, তাপস রায়, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর। ভোট রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রর কেন্দ্র কামারহাটিতেও। আর তারকা মুখের মধ্যে শনিবারের ভোটে লড়ছেন অভিনেত্রী বিজেপি প্রার্থী পার্নো মিত্র। তৃণমূলের তারকা প্রার্থী ২ জন। বারাসতে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী এবং রাজারহাট-গোপালপুরে অদিতি মুন্সি। -আনন্দবাজার