সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমানো টাকার রেকর্ড

সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমানো টাকার রেকর্ড

সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমানো টাকার রেকর্ড

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরেই বিদেশ থেকে ভারতীয়দের কালো টাকা ফিরিয়ে আনার একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকি নোটবন্দিও ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে অন্য কথা। বিদেশ থেকে টাকা ফেরা তো দূরের কথা, সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।

সুইস ব্যাংকের বার্ষিক হিসাব বলছে, ২০২০ সালে শুধু ভারতীয়দের জমা আমানতের পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছে।

২০১৮ সালের শেষে সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের গচ্ছিত টাকা ছিল ১২ হাজার ৬১৫ কোটি। যা অনেকটা কমে যায় ২০১৯ সালে। ওই বছরের শেষে সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের আমানতের পরিমাণ ছিল ৮৯৯ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ। ভারতীয় মুদ্রায় ছয় হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। সেখান থেকে ২০২০ সালে একলাফে এই আমানতের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে। এর আগে ২০০৬ সালে সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের আমানতের পরিমাণ ছিল ৬.৫ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ। যা এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তারপর থেকে ২০১১, ২০১৩ এবং ২০১৭ সাল ছাড়া প্রতিবছরই এই জমার পরিমাণ কমেছে। এবারে আবারো রেকর্ড হারে বাড়ল ভারতীয়দের জমার পরিমাণ।

উল্লেখ্য, এটি সুইস ব্যাংকে ভারতীয় শাখা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বা বিভিন্ন ট্রাস্ট, বন্ড, সিকিউরিটি মানি বাবদ যে অর্থ সুইস ব্যাংকে জমা পড়েছে তার হিসাব। শুধু নগদে জমা আগের তুলনায় কমেছে। তবে এই জমার হিসাব সরকারি হিসেবে। এর বাইরেও ডামি অ্যাকাউন্ট বা ডামি সংস্থার মাধ্যমে অনৈতিকভাবে বহু ভারতীয় সুইস ব্যাংকে টাকা রাখেন।

আবার প্রবাসী ভারতীয়রা বৈধভাবেও সেখানে টাকা রাখেন। তবে, সুইস ব্যাংকে কোন কোন ভারতীয়দের অ্যাকাউন্ট আছে, কারা কত অর্থ জমা রেখেছেন, সে হিসাব কেন্দ্রকে অনেক আগেই তুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি কোন কোন দেশের নাগরিক ওই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে, সে সম্পর্কে তথ্য দেয় সুইজারল্যান্ড ফেডারেল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এই তালিকায় রয়েছে ভারতও। তবে এই তথ্য মানতে রাজি নয় অর্থমন্ত্রক।

তারা বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‌ভারতীয়রা সুইস ব্যাংকে কালো টাকা রাখছেন না। সুইস অথরিটির সাথে সামঞ্জস্য রেখে গোটা বিষয়টি নজরে রেখেছেন মন্ত্রী।’‌

অর্থমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, ‘‌কর সংক্রান্ত বিষয়ে দুই দেশই ২০১৮ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তারপর থেকেই সুইস ব্যাংকে জমার পরিমাণ আমাদের নজরে রয়েছে।’‌মন্ত্রী বলেন, ‘‌ব্যবসায়িক লেনদেন বৃদ্ধির ফলেই হয়ত টাকার পরিমাণ বেড়েছে। তাছাড়া পুরো বিষয়টি সুইস ব্যাংক আমাদের অবগত করেছে।’‌

সূত্র : আজকাল