ইবিতে নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু, এখনও ফাঁকা ৪৮১ আসন

ইবিতে নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু, এখনও ফাঁকা ৪৮১ আসন

ইবিতে নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু, এখনও ফাঁকা ৪৮১ আসন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) উৎসাহ-উদ্দীপনায় বিভাগগুলো তাদের পরিবারের নতুন সদস্যদের বরণ করে নেয়। তবে ক্লাস শুরু হলেও এখনও ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এখনো ৪৮১টি আসন ফাঁকা রয়েছে। দশ দফায় ভর্তি শেষে শূন্য আসন পূরণে প্রকাশ করা হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তি।

জানা যায়, গুচ্ছভূক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের জুলাই-আগস্টে। কেন্দ্রীয়ভাবে ফল প্রকাশের পর পৃথকভাবে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় টানা দশ দফা মেধাতালিকা প্রকাশের পরেও শেষ করতে পারেনি ভর্তি কার্যক্রম। নবম দফার মেধাতালিকার ভর্তি শেষে আসন ফাঁকা ছিল ৩৪৯টি। ফলশ্রুতিতে শূন্য আসন পূরণে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। পরে পহেলা ফেব্রুয়ারি দশম ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন ও চূড়ান্ত ভর্তি শেষে সর্বমোট আবার ৪৮১টি আসন খালি হয়। এসব আসন পূরণে সর্বশেষ ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ’ ইউনিটে মেধাতালিকার ১৫৫৭ থেকে ৯১৭৫, ‘বি’ ইউনিটে ২৬৩ থেকে ৩৫০০ এবং ‘সি’ ইউনিটে ৫৮৬ থেকে ২০০০ সিরিয়াল পর্যন্ত যারা বিভাগ প্রাপ্ত হননি তাদেরকে ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভর্তিতে আগ্রহ প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। 

এদিকে, আসন ফাঁকা রেখেই ক্লাস শুরু করায় গুচ্ছ প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন একাধিক বিভাগের সভাপতি। এছাড়া ভর্তি প্রক্রিয়ায় এই দীর্ঘসূত্রতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবক ও ভর্তিচ্ছুরা।

তাদের দাবি, গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বকীয়তা হারিয়েছে। বারবার ডেকেও শিক্ষার্থী না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। ভোগান্তি কমাতে এই পদ্ধতি শুরু হলেও বাস্তবে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় নানা জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে ভর্তির আগেই শিক্ষাজীবন থেকে একটি বড় সময় হারিয়ে যাচ্ছে। যা শিক্ষার্থীদের সার্বিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অক্ষুণ্ণ রাখতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পদ্ধিতিতে ফিরে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, ‘গত বছর শিক্ষক সমিতি যেসব শর্তে গুচ্ছে অংশ নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ তা পূরণ করতে পারেনি। উল্টো ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এবারো অধিকাংশ শিক্ষক গুচ্ছে অংশ না নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ১১ই ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির সভা ডাকা হয়েছে। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের যেন ভোগান্তি পোহাতে না হয়।’

আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার সিস্টেমটা পরিবর্তন করা উচিত। সঠিক কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই গুচ্ছের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত জটিল। কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে ভর্তিতে বেশি কালক্ষেপণ হচ্ছে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আমাদের আর্থিক প্রয়োজনে সরকারের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী একটা ঘোষণা দিলে আমরা চাইলেই এখান থেকে বের হতে পারি না। গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় একটি আইনি জটিলতার কারণে কিছুদিন দেরি হয়েছে। যে সময়ক্ষেপণ হয়েছে তা আমরা পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো।’