করোনাভাইরাস :ঝিনাইদহেরফুল চাষিরা চরম বিপাকে

করোনাভাইরাস :ঝিনাইদহেরফুল চাষিরা চরম বিপাকে

পাবনা প্রতিনিধি

 করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পরিবহন বন্ধের কারণে ঝিনাইদহের কয়েকশ’ ফুল চাষি চরম বিপাকে পড়েছেন। লোকসান গুনছেন ব্যাপকহারে।

ঝিনাইদহের কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, ক্রেতাদের অভাব ও আন্তঃজেলা পরিবহনের অভাবে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুল বিক্রি করতে পারছেন না। তিনি জানান, জেলার ৬টি উপজেলায়প্রায় ২শ’৪ হেক্টর জমিকে ফুল চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, চলমান দেশব্যাপী পরিবহন বন্ধের কারণে তারা বড় সমস্যায় পড়েছেন। বন্ধের প্রথম দিন থেকেই  দেশের ফুলের বাজারগুলো নির্জন চেহারা বিরাজ করছে। অন্যদিকে, ফুল ফোটানো ফুল বেশি দিন স্থায়ী হয় না। তাই উপায়হীণ হয়ে ফুলচাষিরা তাদের ফুলের ক্ষেতগুলি ধ্বংস করে ফেলছেন। ফুলচাষিদের মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন এবং তারা এখন ঋণকীভাবে পরিশোধ করবে এবং তাদের পরিবারগুলোকে কীভাবে বাঁচাবে এই দুশ্চিন্তায় ফুলচাষিরা।

বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করার সময় গণমাধ্যম কর্মীরা দেখতে পান চাষীরা পুষ্পিত ফুল ছিড়ে ছুঁড়ে ফেলছেন। কারণ তা না করলে পুষ্পিত ফুলসহ গাছ মারা যায়।

কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি এ বছর দু’বিঘা জমিতে গাঁদা, নল গোলাপ (রাজনীগন্ধা)সহ বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করেছেন। করোনাভাইরাস বিস্তারের আগে  ফোটানো ফুল তিনি এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছিলেন।

উপজেলার শাহপুর-ঘিঘাটি গ্রামের স্কুল শিক্ষক খলিলুর রহমান জানান, পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনি আট বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেছেন।"আমি মাঠ থেকে প্রস্ফুটিত ফুল সংগ্রহ শুরু করেছি তবে এর মধ্যেই করোন ভাইরাস দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে ফুলের বাজারগুলি বন্ধ। আমি সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ  নিয়েছি।  সে  ঋণ এখন আমি কীভাবে  শোধ করব তা  ভেবে পাচ্ছি না," বললেন খলিলুর রহমান।

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাবদুল শেখ জানান, তিনি এ বছর ১.১৭ শতাংশ জমিতে ফুলের চাষ করেছেন, তবে করণাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে তার আশা ভেঙে গেছে। উপায়হীন হয়ে চলমান বন্ধের কারণে তিনি ইতোমধ্যেই তার ফুলের বাগানগুলোকে নষ্ট করে ফেলেছেন।

সদর উপজেলার গন্না বাজারের ফুল ব্যবসায়ী দাউদ হোসেন জানান, ফসল কাটার মওসুমে কৃষকরা চরম বিপদে পড়েছেন। যদি এই অবস্থা দীর্ঘকাল ধরে থাকে তবে তাদের দুর্দশার কোনও সীমাবদ্ধতা থাকবে না।

জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, চলমান করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী বন্ধের কারণে কৃষকরা ফুল ফোটানো ফুল বিক্রি করতে পারছেন না, তারা তাদের ক্ষেতগুলি নষ্ট করছেন যদিও এই চাষটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।