ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক জোরদারে হাসিনা-মোদির ঐকমত্য

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক জোরদারে হাসিনা-মোদির ঐকমত্য

সংগৃহীত

ঢাকার সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক আরও জোরদারের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুই দেশের সরকার প্রধান দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন। উভয়ে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সম্মত হন তারা।

নয়াদিল্লিতে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠক হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং এই সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি আলোচনার মাধ্যমে দুদেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের ওপরও জোর দিয়েছেন।

ড. মোমেন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের জন্য তার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তবে বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দুই প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ একান্ত বৈঠক করেছেন, সেখানে ভোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানি না।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলেও জানান আব্দুল মোমেন। সেগুলো হলো কৃষি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি, পারস্পরিক লেনদেন আরও সহজ করা।

এ সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানতে পারি না, মানব না। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এর আগে, জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছান শেখ হাসিনা। এরপর সন্ধ্যায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেন দুই দেশের সরকার প্রধান।

বৈঠক শেষে নরেন্দ্র মোদি এক টুইটে (বর্তমানে এক্স) জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। গত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই আনন্দদায়ক। আলোচনায় কানেক্টিভিটি, বাণিজ্যিক সংযোগের মতো আরও অনেক বিষয় এসেছে।

এর আগে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লির উদ্দেশে শুক্রবার ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বেলা ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে রওনা হন তিনি।

স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ হাসিনার এ সফর। এবারের জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটি।

বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হচ্ছে- মিসর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিংগাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান নানা সম্পর্কের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, ভারতের দিল্লিতে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জি-২০ সম্মেলন বসছে। সম্মেলনে বাংলাদেশসহ নয়টি দেশকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জোটটির চেয়ারম্যান ভারত।