বগুড়ায় বিচারকের স্বাক্ষর জাল, সাবেক পেশকারসহ গ্রেপ্তার ৫

বগুড়ায় বিচারকের স্বাক্ষর জাল, সাবেক পেশকারসহ গ্রেপ্তার ৫

ছবিঃ সংগৃহীত

বগুড়ায় বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে মাদক মামলার আসামিদের অব্যাহতি দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) আদালতের কর্মচারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদ (সাজন), সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেন।

 

জালিয়াতির এই ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান বাদি হয়ে মামলা করেন। মামলার মোট আসামি ৯ জন। গ্রেপ্তার বাদে অন্য ৪ চার আসামি অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদ, নিশিন্দারা এলাকার ওহেদুজ্জামান মাসুদ, নওগাঁর আয়েশা আক্তার শিমু ও মরিয়ম আক্তার নিপু।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদসহ পাঁচজন ২০২০ সালের একটি মাদক মামলার আসামি। গত ১৪ অক্টোবর এই মামলার আসামিদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। মামলার আরেক আসামি আয়েশা আক্তার শিমু জামিনে ছিলেন। কিন্তু গত ১৪ অক্টোবর তিনি আদালতে হাজির হননি। এই কারণে তাকে পলাতক হিসেবে বিবেচনা করছে আদালত। তবে নির্ধারিত দিনে হাজির হওয়া আবু সাহেদ, মোক্তার হোসেন, ওয়াহেদুজ্জামান ও মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে তাদের আইনজীবী আদালতে সময় চান। সাক্ষী না থাকায় বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা আরেকটি দিন ধার্য করেন।

 

কিন্তু, এই দিন ধার্যের আদেশ নথি আদালত থেকে গায়েব হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই দিন বিকেলে বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রশিদ একটি নথি পান। এতে দেখা যায়, সাবেক পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদের পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৪৯ ধারার বিধান মতে আসামিদের অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ দেয়া আছে।

 

বিষয়টি খোঁজখবর করে আদালত কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদের (সাজন) যোগসাজশে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করেছেন।

 

জালিয়াতি মামলার বাদি মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আব্দুল মান্নান আদালতের পেশকার ছিলেন। তার ছেলে আবু সাহেদ ২৬০ পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেপ্তার হন। সেই মামলার শুনানি ছিল। পেশকার হওয়ার সুবাদে তিনি আদালতের অন্য কর্মচারীদের হাত করে নথি-জালিয়াতি করেন।

 

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, সিজিএম আদালত থেকে বিচারকের স্বাক্ষর ও নথি জালিয়াতির ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়। পরে সোমবার আদালত থেকে তিন কর্মচারী আটক করা হয়। আর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেনকে আটক করে। পরে মামলা হলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।