৭ মার্চের ভাষণ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির মহাকাব্য: রাষ্ট্রপতি

৭ মার্চের ভাষণ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির মহাকাব্য: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির জন্য পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির মহাকাব্য।

বৃহস্পতিবার ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ উপলক্ষে আজ (৬ মার্চ) দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বজ্রকণ্ঠে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।’

পুরো বাঙালি জাতি সেদিন মন্ত্রমুগ্ধের মতো অবগাহন করেছিল রাজনীতির মহাকবি বঙ্গবন্ধুর ‘অমর কবিতা’। মাত্র ১৮ মিনিটের এই মহাকাব্যে ধ্বনিত হয়েছিল বাঙালি জাতির মুক্তির মহামন্ত্র। বঙ্গবন্ধুর শাণিত ও প্রদীপ্ত উচ্চারণে কেঁপে উঠেছিল পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের মসনদ। মূলত ৭ মার্চের ভাষণেই নিপীড়িত-নির্যাতিত বাঙালি জাতি খুঁজে পেয়েছিল শোষণমুক্তির কাঙ্ক্ষিত পথ। তাই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির জন্য পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির মহাকাব্য।

৭ মার্চ বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি এ উপলক্ষ্যে স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। তবে তা একদিনে অর্জিত হয়নি। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ এর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের দীর্ঘ বন্ধুর পথে বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম সাহস, সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সঠিক দিকনির্দেশনা জাতিকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১ মার্চ থেকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অনন্য বাগ্মিতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় ভাস্বর ওই ভাষণে বাঙালির আবেগ, স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে একসূত্রে গেঁথে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ঐতিহাসিক সেই ভাষণের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির বহুআকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর কালজয়ী ভাষণগুলোর অন্যতম। একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ। বাংলার মানুষের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আত্মার সম্পর্ক ছিল। তাই, তার ভাষণে মূলত মানুষের মনে কথাগুলো ফুটে উঠেছিল। বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণ কেবল আমাদের নয় বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্যও প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে, বলেন রাষ্ট্রপতি।