টানা দ্বিতীয় জয় মাশরাফি-মুশফিকের সিলেটের

টানা দ্বিতীয় জয় মাশরাফি-মুশফিকের সিলেটের

সংগৃহীত

ব্যাটারদের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফি-মুশফিকের সিলেট সিক্সার্স।

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট ৬ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব-মিরাজের ফরচুন বরিশালকে। বরিশালের ছুঁড়ে দেয়া ১৯৫ রানের টার্গেট এক ওভার বাকী রেখেই স্পর্শ করে জয় তুলে নেয় সিলেট। গতকাল বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়েছিলো সিলেট।  

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। সিলেটের পক্ষে মাশরাফি বিন মর্তুজার জায়গায় টস করেন মুশফিকুর রহিম।
ব্যাট হাতে মারমুখী মেজাজে  শুরু করেন  দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয়  ও শ্রীলংকার চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা। সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রথম ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন আনামুল। ওভার থেকে আসে ১৫ রান ।
পরের ৫ ওভারেও মারমুখী ছিলেন বিজয়- সিলভা তুলে নেন  ৩৯ রান । পাওয়ার প্লেতে বরিশাল পায় বিনা উইকেটে ৫৪ রান। অষ্টম ওভারে বরিশালের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মাশরাফি। ২১ বলে ২টি চার ও ১টি ছয়ে ২৯ রানে বিজয়  শিকার হন  মাশরাফির। পরের ওভারে ডি সিলভাকে থামান পাকিস্তানের স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৫ বলে ৩৬ রান করেন তিনি।
৭৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ফিরলেও, বরিশালের রানের চাকা বিধ্বংসী মেজাজেই ঘুড়িয়েছেন সাকিব। শ্রীলংকার থিসারা পেরেরার করা ইনিংসের ১৭তম ওভারে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ১৯ রান তুলেন সাকিব। ২৬ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। অর্ধশতক পেতে ৫টি চার ও ৩টি ছয় মারেন তিনি।
বিধ্বংসী রুপে থাকা সাকিবকে ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে আউট করেন মাশরাফি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাকিবের ক্যাচ নেন আমির। তবে ব্যক্তিগত ৩২ রানে ও ৬৬ রানে  দু’বার জীবন পান সাকিব। দুর্ভাগা বোলার   ছিলেন আমির।
সাকিবের পর শেষদিকে আফগানিস্তানের করিম জানাতের ২টি ছক্কায় ১২ বলে অপরাজিত ১৭ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৪ রান পায়  বরিশাল। বরিশালের হয়ে মিডল-অর্ডারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১২ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে সিলেটের মাশরাফি ৪ ওভারে ৪৮ রানে ৩ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৯৫ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ধাক্কা খায় সিলেট। রান আউটের ফাঁদে পড়েন ওপেনার নেদারল্যান্ডসের কলিন অ্যাকারম্যান। ১ রান করেন তিনি।
অ্যাকারম্যানকে হারানোর দুঃখ ভুলিয়ে দিয়ে সিলেটকে দুর্দান্ত এক জুটি উপহার দেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। পাওয়ার-প্লেতে ৫৪, ১১তম ওভারে দলের রান ১০০তে নিয়ে যান তারা। এসময় দু’জনই ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১২তম ওভারে নিজের ভুলে রান আউট হন শান্ত। একবার জীবন পেয়ে ৪০ বল খেলে ৫টি চার ও ১টি ছয়ে ৪৮ রান করেন শান্ত। ৬৭ বলে ১০১ রানের জুটি গড়েন শান্ত-হৃদয়।
শান্তর আউটের পর ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন চার নম্বরে নামা জাকির হাসান। এরমাঝে ১৩তম ওভারে চার মেরে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হৃদয়। ৩০ বলে টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন হৃদয়। ১৫তম ওভারে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর আউট হওয়ার আগে  ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন হৃদয়।
হৃদয় ফেরার  পর  উইকেটে এসে মারমুখী ব্যাট করেন মুশফিক। প্রথম ৬ বলেই ২০ রান তোলেন  মুশফিক। অন্যপ্রান্তে ১৪ বলে ৩৫ রান তুলেন জাকির। ১৬ ওভার শেষে সিলেটের স্কোর ৩ উইকেটে ১৬৪। এমন অবস্থায় শেষ ২৪ বলে ৩১ রান দরকার পড়ে সিলেটের।
শ্রীলংকার চাতুরাঙ্গার করা ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন জাকির। একবার জীবন পেয়ে ১৮ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৩ রানের টনের্ডো ইনিংস খেলেন তিনি।
জাকিরের আউটের পর শেষ ১২ বলে সিলেটের দরকার পড়ে ১৯ রান। ১৯তম ওভারে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২০ রান তুলে সিলেটের জয় নিশ্চিত করেন শ্রীলংকার থিাসার পেরেরা। ৯ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন পেরেরা। ১১ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।

সূত্র: বাসস